সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা তিন মামলার সব বিচারিক কার্যক্রম দুই মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (১ জুন) বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে কাজলের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।
কাজলের আইনজীবী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিন মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছিল। হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে মামলার সব কার্যক্রম ২ মাস স্থগিত করেছেন। একই সঙ্গে নিম্ন আদালত থেকে এসব মামলার নথি তলব করেছেন। হাইকোর্ট আগামী ২৮ জুলাই এসব আপিলের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক কাজলের মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ
গত ৮ নভেম্বর ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা ৩ মামলায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস সামছ জগলুল হোসেন এই চার্জ গঠন করেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি ৩ মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন তার আইনজীবী জ্যোর্তিময় বড়ুয়া।
কাজলের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ওসমান আরা বেলী এবং সুমাইয়া চৌধুরী বন্যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় ২০২০ সালের ৯, ১০ ও ১১ মার্চ ৩টি পৃথক মামলা দায়ের করেন। মামলাগুলো করা হয় যথাক্রমে শেরেবাংলা নগর, হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক মোহাম্মদ রাসেল মোল্লা ২০২০ সালের ৪ এপ্রিল, ৪ ফেব্রুয়ারি ও ১৪ মার্চ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তিনটির অভিযোগপত্র জমা দেন। কাজলের বিরুদ্ধে ফেসবুকে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং যুব মহিলা লীগের শীর্ষ নেতাদের সম্পর্কে অশালীন, মানহানিকর, আপত্তিকর ও ভুয়া তথ্য প্রচারের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
সাংবাদিক কাজল ২০২০ সালের ১০ মার্চ নিখোঁজ হন। ওই বছর ৩ মে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাকে বেনাপোল সীমান্ত এলাকায় উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে ঘুরতে দেখে আটক করে। একই দিনে তাকে যশোরের একটি আদালত ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে হাজতে পাঠায়।পরবর্তীতে তাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে ২০২০ সালের ২৫ ডিসেম্বর জামিনে কারাগার থেকে মুক্ত হন কাজল।