সারাদেশে লোডশেডিং অব্যাহত থাকায় মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন গ্রাহকরা।
বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) তথ্যমতে, ১৪ হাজার মেগাওয়াটের চাহিদার বিপরীতে ১৩ হাজার মেগাওয়াটের কম উৎপাদন হওয়ায়, দেশে প্রায় এক হাজার ৪০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়।
ফলে রাজধানীর ভেতরে ও বাইরের গ্রাহকেরা ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের শিকার হচ্ছেন বলে জানান বিপিডিবির এক কর্মকর্তা।
তিনি বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের ঘাটতির জন্য বিদ্যুত উৎপাদন হ্রাসকে দায়ী করে বলেন, ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বিপিডিবিকে প্রায় তিন হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়েছে।
শুধু ঢাকা শহরেই ৫০০ মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং হয়।
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান জানান, চাহিদা ও সরবরাহের ব্যবধান মেটাতে তার এলাকায় ৪০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়েছে।
তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘ডিপিডিসি এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের চাহিদার বিপরীতে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, লোডশেডিংয়ের জন্য একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে জনগণের ভোগান্তি কম হবে।
দেখুন:
রাজধানীর ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে- মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, লালবাগ, সূত্রাপুর, যাত্রাবাড়ী, মালিবাগ, মগবাজার, তেজগাঁও, কাকরাইল, শান্তিনগর, আগারগাঁও, কলাবাগান, কাওরানবাজার ও তেজতুরিবাজার এলাকা।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সংকটের কারণে দেশব্যাপী লোডশেডিং বাড়ছে
ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) আওতাধীন এলাকাগুলোকেও বেশ কিছু স্পেল ব্ল্যাক আউটের সম্মুখীন হতে হয়েছে।
ডেসকোকে তার এলাকায় ১৩৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আমীর আলী।
তিনি জানান, ডেসকোকে এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি চাহিদার বিপরীতে ৮০০ মেগাওয়াটের কিছু বেশি বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়েছে।
ডেসকো প্রধানত রাজধানীর পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম এবং পূর্বাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিতরণ করে। যার মধ্যে রয়েছে উত্তরা, মিরপুর, বাড্ডা, গুলশান, বনানী, বারিধারা, নিকেতন ও বাড্ডা।
তবে রাজধানীর বাইরের বিদ্যুত গ্রাহকদের অভিযোগ, তাদেরও কয়েক ঘণ্টা ব্ল্যাকআউটের শিকার হতে হয়েছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর এক কর্মকর্তা জানিয়েছে সারাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে ‘এমনকি অনেক এলাকায় গ্রাহকদের দিনে ৫-৬ ঘন্টা বিদ্যুৎহীন থাকতে হয়েছে।’
এদিকে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতি উন্নয়নের উপায় খুঁজতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় বিপিডিবি ও পেট্রোবাংলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছে।
বৈঠকে অংশ নেয়া একজন কর্মকর্তা জানান, বৈঠক থেকে পেট্রোবাংলাকে গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছিল, যাতে আরও গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র আবার চালু করতে পারে।
আরও পড়ুন: টানা বর্ষণ: কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বেড়েছে উৎপাদন