সিলেটে বিএনপির সমাবেশের দিন আগামী শনিবার (১৯ নভেম্বর) সকাল-সন্ধ্যা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস মালিক সমিতি। এদিন নগরীর আলিয়া মাদরাসা মাঠে এ গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
প্রথমে দুই দফা দাবিতে আগামী শনিবার (১৯ নভেম্বর) পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে সিলেট জেলা পরিবহন মালিক সমিতি। ফলে বিএনপির গণসমাবেশের দিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে না বাস। বাস চলাচল বন্ধের খবরের কয়েক ঘণ্টা পর এবার সড়কে সব ধরনের গাড়ি না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিলেট জেলা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। ৪ দফা দাবিতে তারা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন বলে পরিবহন শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন।
সমাবেশকে ঘিরে সিলেটে বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত রয়েছেন। তবে সিলেটে ডাকা পরিবহন ধর্মঘটের কারণে কিছুটা অস্বস্তিতে রয়েছেন।
তবে এসব পরিবহন ধর্মঘট সমাবেশে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
জানা যায়, বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সংসদকে বিলুপ্ত, সরকারকে পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে বিভিন্ন বিভাগে বিএনপি বিভাগীয় সমাবেশ করছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল বিভাগে এবং ফরিদপুর জেলায় গণসমাবেশ করেছে দলটি।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) সিলেটে দলটির উদ্যোগে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠিতব্য এ গণসমাবেশকে সফল করে তুলছে বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে মাঠে কাজ চালিয়েছেন। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী সবকিছু ঠিক থাকলেও হুট করে এসে বাঁধা দাঁড়িয়েছে ‘পরিবহন ধর্মঘট’।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’র সাধারণ সম্পাদক মো. জাকারিয়া বলেন, ‘আমরা চার দফা দাবিতে ধর্মঘট ডেকেছি। আমাদের দাবি পূরণ না হলে আমরা কঠোর আন্দোলন ডাকবো।’
আরও পড়ুন: শুক্রবার সকাল থেকে মৌলভীবাজারে ৩৬ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘট
দাবিগুলো হচ্ছে-সিলেটের সবকয়টি পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি প্রদান, সিএনজি চালিত অটোরিকশার নতুন রেজিস্ট্রেশন প্রদান, সিলেটের লামাকাজী ও শ্যাওলা সেতুতে টোল আদায় বন্ধ, হাইওয়েতে টমটম ও নসিমন চলাচল বন্ধ করতে হবে।
তবে নতুন সিএনজি চালিত অটোরিকশার নিবন্ধন না দেয়াসহ দুই দাবিতে সকাল-সন্ধ্যা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল কবীর পলাশ জানান, দুইদফা দাবিতে এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে নতুন করে সিএনজি চালিত অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন না দেয়া এবং অটোরিকশায় তিন জনের বেশি যাত্রী পরিবহন না করা ও চালকের আসনের পাশে গ্রিল লাগানো।
পলাশ আরও বলেন, বিএনপির সমাবেশের তারিখ ছিল ২০ নভেম্বর। পরবর্তীতে তারা তারিখ পরিবর্তন করেছে ১৯ নভেম্বর। কিন্তু পরিবহন মালিক সমিতি এর আগেই তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তাই বিএনপির সমাবেশের সঙ্গে এই ধর্মঘটের কোন সম্পর্ক নেই।
এদিকে, পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে খুব বেশি শঙ্কিত নন বিএনপি নেতারা। ধর্মঘট ডাকা হলে করণীয় ঠিক করে রেখেছেন তারা। নেতাকর্মীদের আগের দিন সিলেট শহরে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে।
শহরে থাকা ও খাওয়ারও ব্যবস্থা করেছেন তারা।
ধর্মঘটের ব্যাপরে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বিএনপির সমাবেশ বাধাগ্রস্থ করতেই সরকার চাপ দিয়ে ধর্মঘট ডাকিয়েছে। তবে কোন ষড়যন্ত্রই গণজমায়েত বাধাগ্রস্থ করতে পারবে না।
আরও পড়ুন: সিলেটে বিএনপির সমাবেশের দিন বাস ধর্মঘট