রংপুরে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরিতে নিয়োগের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের স্বাক্ষর জাল করে ডিও লেটার প্রদানের ঘটনায় জড়িত এক পুলিশ সদস্যসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
বুধবার (২৭ অক্টোবর) রাত থেকে বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, রংপুর সদর উপজেলার উত্তর মহেষপুর গ্রামের জিয়াউর রহমানের ছেলে জুয়েল রানা (২৮), একই এলাকার নয়া মিয়ার ছেলে আল আমিন (১৯), মিঠাপুকুর উপজেলার রূপসী গাছুপাড়া গ্রামের মৃত সাইদুল হকের ছেলে মোসাদ্দেক হোসেন (২০) এবং গাইবান্ধার সাদুল্লাহপুর থানাধীন ফুলবাড়ি গ্রামের মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে ও রংপুর মহানগর পুলিশ লাইনের এমটি (যানবাহন) শাখায় কর্মরত কনস্টেবল মাসুদার রহমান মাসুদ (৪৫)।
আরও পড়ুন: সহিংসতায় ইন্ধনদাতাদের নাম শিগগিরই প্রকাশ হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মামলা সূত্রে জানা যায, আসামি জুয়েল রানা তার ভাতিজা আল আমিনকে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার বিনিময়ে জালিয়াতিচক্রের সদস্য মাসুদার রহমান মাসুদের সঙ্গে আলোচনা করেন। মাসুদ তাদেরকে চাকরির নিশ্চয়তা দিয়ে আল আমিনকে ঢাকায় জালিয়াতিচক্রের অপর এক অজ্ঞাত সদস্যের কাছে পাঠিয়ে দেন। তার কথা মতো আল আমিন ঢাকা গিয়ে ওই অজ্ঞাত সদস্যের কাছ থেকে একটি চিঠি নিয়ে এসে মাসুদকে দেন। একইভাবে অপর আসামি মোসদ্দেক হোসেনকেও চাকরির প্রলোভন দেখান মাসুদ।
এদিকে, ডিও লেটারেরর বিষয়টি সন্দেহ হলে গত ২৭ অক্টোবর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের গোপনীয় শাখা হতে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে ‘ট্র্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল’ (পুরুষ) পদে নিয়োগের জন্য সরকারি লগো, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরের সিল সম্বলিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের ২৪ অক্টোবর স্বাক্ষরিত ডিও লেটারটি জব্দ করেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্ক (এসআই) বুলবুল আহম্মেদ। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশক্রমে সহকারী পুলিশ সুপার (এসএএফ) আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে একটি দল অভিযান চালিয়ে বুধবার রাত পৌনে নয়টার দিকে নগরীর সুরভী উদ্যানের সামন থেকে আসামি আল আমিনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেয়া তথ্যমতে বাকিদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসময় আসামি আল আমিনের মুঠোফোন তল্লাশি করে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে ‘ট্র্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল’ (পুরুষ) পদে নিয়োগের জন্য সরকারি লগো, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরের গোল সিল সম্বলিত রংপুর পুলিশ সুপার বরাবর প্রেরিত একটি খামের ছবির সন্ধান পায় পুলিশ।
আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় তৃতীয় পক্ষের ইন্ধন দেখছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই বুলবুল আহম্মেদ বাদী হয়ে ওই চারজনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা আসামি করে বৃহস্পতিবার রাতে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
রংপুর মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত ) মো.হোসেন আলী জানান, মামলার পর আসামিদের রাতেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।