হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানায় চুরির মামলার আসামি গোলাম রাব্বানীর (২৫) মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দেবেন হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) হাসিবুল ইসলাম। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) পলাশ রঞ্জন দে ও কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. কামরুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) পুলিশ সুপার মো. আক্তার হোসেন কমিটিকে ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মৃত গোলাম রাব্বানী হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার নন্দিপাড়া গ্রামের মহিউদ্দিন মিয়ার ছেলে। রাব্বানীর বড় ভাই মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন তার ভাইয়ের শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্নের একটি ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করে ভাই হত্যার বিচার চান।
গ্রেপ্তারের পর রাব্বানীকে হাজতে রাখার কথা, কেন তাকে অন্য কক্ষে রাখা হবে বা পুলিশ কোথায় ছিল- এ প্রশ্ন তুলে তিনি তার ভাই হত্যার বিচার দাবি করেন।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসককে কৃষি মন্ত্রণালয়ে বদলি
মঈন উদ্দিন বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে মঙ্গলবার দুপুর ২টায় বাড়ির সামনে থেকে পুলিশ আমার ভাইকে তুলে নিয়ে যায়। আমরা পরিবারের কেউ বিষয়টি জানতাম না। সন্ধ্যা ৭টায় আমরা জানতে পারি সে বানিয়াচং থানায় আছে। তখন আমার মা থানায় যান। থানা থেকে আমার মাকে জানানো হয় রাব্বানীর বুকে ব্যথা, তাই তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রাত ১০টার পর বানিয়াচং থানা থেকে জানানো হয়, রাব্বানী থানার রেস্টরুমে তার স্যান্ডো গেঞ্জি ও কোমরের বেল্ট খুলে ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে।’
মুঠোফোনে উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম রাব্বানীকে গ্রেপ্তার করার কথা স্বীকার করেন। তবে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি পরে ফোন দিয়ে জানাবেন বলে কল কেটে দেন।
মঙ্গলবার রাতেই একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে গোলাম রাব্বানীর সুরতহাল হয়। বুধবার হবিগঞ্জ মর্গে গোলাম রাব্বানীর ময়নাতদন্ত শেষে বিকালে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
ময়নাতদন্ত সম্পর্কে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের আরএমও ডা. নাজমা আক্তার কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি।
বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন জানান, গত মঙ্গলবার দুপুরে গোলাম রাব্বানীকে একটি টমটম চুরির মামলায় গ্রেপ্তার করেন এসআই মনিরুল ইসলাম। তাকে হাজতে না রেখে পাশের একটি কক্ষে রাখা হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।
ওসি বলেন, সন্ধ্যায় রাব্বানীকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় গেঞ্জির ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায়। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
রাব্বানীর বিরুদ্ধে ৭/৮টি চুরি মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।