রবিবার ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে সেই সময় পর্যন্ত (মুজিব বর্ষ) একটি উপায়ে উদযাপন করতে হবে যাতে দেশের সাধারণ মানুষ এর সুফল পেতে পারেন। একই সাথে, আমাদের উৎসবগুলো এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সুতরাং আমরা আগামী ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুজিব বর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এই কর্মসূচি অব্যাহত রাখব।’
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস ২০২১ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ আলোচনার আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণের প্রতিজ্ঞা নিন: প্রধানমন্ত্রী
মুজিব বর্ষে ঘর পাচ্ছেন ফরিদপুরের দেড় হাজার গৃহহীন পরিবার
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
চলমান ১০ দিনের রাষ্ট্রীয় উদযাপন শেষে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা, প্রবন্ধ ও অন্যান্য প্রতিযোগিতা, দোয়া মাহফিল, বৃক্ষরোপণ বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ে দরিদ্রদের সহায়তার জন্য মুজিব বর্ষ পালনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘নেতা-কর্মীদের বলব, আমরা বৃক্ষরোপন কর্মসূচি অব্যাহত রাখব। ১০ দিনের রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি শেষ হবে। পরে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রত্যেকটা সহযোগী সংগঠনকে নিজস্ব কর্মসূচি নিতে হবে। সেটি ঢাকা বা মহানগর পর্যায়ে শুধু নয়, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যন্ত করতে হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আর পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই: প্রধানমন্ত্রী
শিশুদের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য কাজ করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
দরিদ্রদের সহায়তা কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে দরিদ্রদের সহায়তা করতে হবে। করোনায় অর্থনৈতিকভাবে মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, আমরা সেটা নিশ্চিত করছি, এ বিষয়গুলো দলের পক্ষ থেকেও দেখতে হবে।’
শেখ হাসিনা মুজিব বর্ষে তার দলের সকল নেতা-কর্মীদের বৃক্ষরোপণ অভিযান চালিয়ে নিতে আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা সম্ভবত জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ উদযাপনের জন্য বৃহৎ জনসমাগম অনুষ্ঠানের কর্মসূচির ব্যবস্থা করতে পারিনি, তবে আমরা বৃক্ষরোপণ অভিযান নিয়েছি এবং অনেক গাছ লাগিয়েছি।’
বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ সংক্রমণের নতুন ঢেউ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের খাদ্য সঙ্কট রোধের লক্ষ্যে জনগণকে এক ইঞ্চি কৃষিজমিও অনাবাদি না রাখার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে আহ্বান জানান।
তিনি নতুন করে করোনাভাইরাসের প্রকোপ মোকাবিলায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার আহ্বান জানান।
সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে দেশে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে বলে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, মহামারির নতুন ঢেউয়ের কারণে মানুষ যাতে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে জন্য সরকারকে মনোযোগ দিতে হবে।
আরও পড়ুন: সব উপজেলায় কমিউনিটি ভিশন সেন্টার স্থাপন করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
জাতির জন্য বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তিনি কখনো কারও কাছে মাথা নত করেননি।’
শেখ হাসিনা বলেন, যদি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্ম না হতো তাহলে আমরা বাঙালিরা জাতি হিসেবে কখনও বিশ্বে মর্যাদা পেতাম না।
তিনি বলেন, জনগণ আওয়ামী লীগকে ‘ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছিল বলে’ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠান উদযাপন করার সুযোগ হয়েছে।
আরও পড়ুন: মুজিব বর্ষেই বঙ্গবন্ধুর বাকি খুনিদের দেশে আনা সম্ভব হবে, আশা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল, আজকে আর সেই নাম মুছতে পারবে না।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘যেখানে মিথ্যা ঘোষক বানানোর চেষ্টা হয়েছিল আজ আন্তর্জাতিকভাবেও আপনারা দেখেন সেই ঘোষকের আর কোন ঠিকানা থাকবে না।’
তিনি বলেন, আজকে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ নিজেরাই প্রচার করছেন এবং অনেক জায়গায় রেজ্যুলুশনও হচ্ছে যে, ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন।
এছাড়া দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এবং কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম এমপি ও আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান এবং মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বক্তব্য দেন।
আলোচনা সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ।