সংশ্লিষ্টরা জানান, খুলনা মহানগরীতে স্টেশনারি, মুদি, ছাপাখানা, গার্মেন্টস, কম্পিউটার, বই, ঘড়ি, জুয়েলারি, জুতা, রেস্টুরেন্ট, সেলুনসহ প্রায় ৫০ হাজার ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে দুই লক্ষাধিক শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত। করোনার কারণে মার্চ-জুলাই পাঁচ মাস ২০ শতাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। অনেক প্রতিষ্ঠান টিকে থাকতে দু-একজন কর্মচারী দিয়ে কাজ চালিয়ে নিচ্ছে। তবে মহামারী আরও দীর্ঘ হলে এসব প্রতিষ্ঠানও শ্রমিক ছাঁটাই শুরু করবে।
নগরীর ফুলবাড়ী গেট এলাকার সেলুন মালিক প্রদীপ শীল জানান, আগে দিনে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা আয় হতো। করোনা সংক্রমণের পর থেকে দোকান বন্ধ। বর্তমানে কিছু কার্যক্রম চালালেও দেড়-দুইশ টাকার বেশি আয় হচ্ছে না। এতে দোকান খরচও উঠছে না।
নগরীর রেলওয়ে এলাকার দোকান মালিক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার আগে দোকানে টি-শার্ট, জিন্স প্যান্টসহ প্রায় ১২ লাখ টাকার পণ্য ছিল। দিনে ১০-১২ হাজার টাকা বিক্রি হতো। দীর্ঘদিন মার্কেট বন্ধ থাকায় ব্যবসাও বন্ধের পথে। ইতোমধ্যে তিন কর্মচারীর দুজনকে ছেড়ে দিয়েছি। কতদিন চলতে পারব, তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি।’
বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিসি) খুলনা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও গ্রাফিক্স কম্পিউটারের মালিক শেখ শহীদুল হক সোহেল বলেন, ‘নগরীর বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২ লাখ শ্রমিক-কর্মচারী রয়েছেন। এদের মধ্যে প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। সামনে আরও কঠিন সময় আসছে।’
তিনি জানান. ‘জলিল টাওয়ারের কম্পিউটার মার্কেটসহ মহানগরীতে প্রায় ১০০ কম্পিউটারের দোকানে চার শতাধিক কর্মচারী কাজ করেন। এসব কর্মচারী সফটওয়্যারের ওপর প্রশিক্ষিত হওয়ায় মালিক ইচ্ছা করলেও তাদের বাদ দিতে পারছেন না। ফলে বাধ্য হয়ে লোকসান গুনছেন।’
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির খুলনা অঞ্চলের সভাপতি রেজাউল করিম জানান, করোনার প্রভাবে খুলনা মহানগরীর প্রায় ২০ শতাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী দু-তিন মাসে আরও অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। তখন শ্রমিক-কর্মচারীরা বেকায়দায় পড়বেন।
খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মফিদুল ইসলাম টুটুল জানান, আর্থিক সংকটে ব্যবসায়ীদের অনেকেই তাদের কর্মচারী ছাঁটাই করছেন। তবে ব্যবসায়ীদের প্রতি কর্মচারীদের সাথে যথাসম্ভব মানবিক আচরণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।