প্রস্তাবিত সহায়তার মধ্যে ৪০০ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে এবং বাকি টাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ঋণ হিসেবে চান তারা।
এ শিল্প খাতটি করোনাভাইরাস থেকে সৃষ্ট সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে গত ৯ এপ্রিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে এ প্রস্তাব দেয় দেশের ব্যাটারি শিল্পের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন অ্যাকিউমুলেটর ব্যাটারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এবিএমইএবি)।
সংগঠনটির মতে, দেশে ২২টি ব্যাটারি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হালকা প্রকৌশল পণ্য উৎপাদন করে এবং স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ৫৯টি দেশে তা রপ্তানি করে। এ শিল্পের বাজারের আকার বর্তমানে ১০ হাজার কোটি টাকা।
এ খাতকে শ্রমনির্ভর হিসেবে উল্লেখ করে আখ্যায়িত করে এবিএমইএবি জানায়, প্রায় ১০ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ খাতে নিযুক্ত রয়েছেন। এর বিশাল সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে ইতোমধ্যে সংস্থাপক ব্যাটারিকে ‘২০২০ সালের বার্ষিক পণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
ব্যাটারি নির্মাতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা ব্যাটারি খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে দিয়েছে এবং সরকারের ৬০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করার একটি বড় সুযোগ তৈরি করেছে।
‘কিন্তু কোভিড-১৯ সংকটের কারণে এখন এ খাতে বিনিয়োগ ব্যাহত হচ্ছে। ফলে উৎপাদনকারীরা তাদের বিনিয়োগের পরিকল্পনা কার্যকর করতে পারেননি এবং অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে এক ধরনের ভীতি তৈরি হচ্ছে,’ জানায় এবিএমইএবি।
ব্যাটারি নির্মাতারা জানান, তারা ইতোমধ্যে রপ্তানি বাজারে ৫০০ কোটি টাকারও বেশি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন এবং অবৈধ ব্যাটারি নির্মাতাদের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবসার কারণে আরও এক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
আর্থিক ক্ষতির কথা উল্লেখ করে এবিএমইএবি আরও জানায়, ‘অবৈধ ব্যাটারি নির্মাতাদের কারণে এমনিতেই যখন এ ব্যবসা খাতের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, তখনই করোনাভাইরাস নতুন দুর্যোগ হিসেবে দেখা দিয়েছে। কারণ শিল্প শ্রমিকদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাটারি ইউনিটগুলোর উৎপাদন কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া এক চিঠিতে এবিএমইএবি জানিয়েছে, অনেক অর্ডার বাতিল হয়ে যাওয়ার ফলে পুরো ব্যাটারি শিল্পই এক বিরাট আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে এবং তা রপ্তানি ব্যবসার ওপর প্রভাব ফেলছে।
‘এ পরিস্থিতিতে আমাদের নীতি ও আর্থিক সহায়তা উভয়ই প্রয়োজন,’ বলেন এবিএমইএবি সভাপতি মুনোয়ার মঈন।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পসহ বিভিন্ন খাতের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার প্রশংসা করে তিনি বলেন, আর্থিক সহায়তা হিসাবে ব্যাটারি শিল্পে দীর্ঘমেয়াদি ঋণের প্রয়োজন।