ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক হলে চালের দাম কমবে।
আরও পড়ুন: বেড়েছে চালের দাম, সবজি ও তেলের দামও বাড়তি
বড় বাজারের চাল ব্যবসায়ীরা জানান, মোকাম থেকেই চালের দাম বাড়তি। সে কারণে খুচরা বাজারে চালের দাম কমছে না। তারা প্রতি কেজিতে ২০-৩০ পয়সা লাভে চাল বিক্রি করছেন।
দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে লাগামহীনভাবে চালের দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি বাসমতি ৬৮ টাকা, স্বর্ণা (মোটা) ৪২-৪৪ টাকা, ২৮ বালাম ৪৫-৪৮ টাকা, মিনিকেট ৬০-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসেবে গত বছরের এই সময়ে যে চাল ৫০ টাকা কেজিতে পাওয়া যেত, এখন সেই চালের কেজি ৬০ টাকা।
আরও পড়ুন:শেরপুরে চালের দাম বাড়ানোর দাবি চালকল মালিকদের
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে চিকন চালের দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে মাঝারি চালের দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশ ও মোটা চালের দাম বেড়েছে ৩৭ শতাংশ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, মোটা চালের দাম এখন ৪৮-৫০ টাকা কেজি। মাঝারি ধরনের চালের দাম ৫৮-৬০ টাকা কেজি ও চিকন চালের দাম প্রতি কেজি ৬৫-৬৬ টাকা।
অসন্তোষ প্রকাশ করে নগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজার এলাকার আবদুল কাদের বলেন, ‘এভাবে চালের দাম বাড়তে থাকলে মানুষ ভাত খাওয়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে। চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের মানুষ চরম কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।’
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ফের বাড়ল সব ধরনের চালের দাম
এদিকে শুধু চাল নয়, গোস্তের দামও রয়েছে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়তি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে নগরীর বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর এক মাসের ব্যবধানে বাজারভেদে বেড়েছে ৩০ টাকা পর্যন্ত।
নগরীর কয়েকটি বাজারের তথ্য, খুচরা পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৪৫ টাকায়। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৩০-১৩৫ টাকার মধ্যে। আর মাসখানেক আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১১৫-১২০ টাকা।
তবে দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে ব্রয়লার মুরগির চাহিদা বেড়ে গেছে। কিন্তু সরবরাহ তুলনামূলক কম। এ কারণেই দাম বেড়েছে। কিছুদিন আগেও কেজি প্রতি ১২৫ টাকায় ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে। এখন সেই মুরগি ১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বস্তা প্রতি চালের দাম বেড়েছে ৪০০ টাকা
চাল ও মুরগির দামে অস্বস্তি দেখা দিলেও সবজির দাম স্বস্তি বিরাজ করছে। শীতের সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় নগরীর বাজারগুলো পাকা টমেটো, গাজর, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি তুলনামূলক কম দামেই কিনতে পারছেন ক্রেতারা। আর আলু ও পেঁয়াজের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে একটু কমেছে। তবে গত সপ্তাহের মতো এখনও বাজারে সবচেয়ে দামি সবজির তালিকায় রয়েছে পটল ও ঢেঁড়স। এ দুটি সবজির কেজি এখনও ১০০ টাকা। পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকা দরে। শিম বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। বেগুন ৩০ টাকা, পেঁপেঁ ৩০-৩৫ টাকা, গাজর ১৫-২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। লাউ বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা পিস। খুচরা পর্যায়ে দেশি পেঁয়াজের কেজি ৩৫ টাকা। আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৮ টাকা কেজি।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: লকডাউন আতঙ্কে লাফিয়ে বাড়ছে চালের দাম
টিসিবির তথ্য অনুসার, দেশি ভালো মানের পেঁয়াজের কেজি ২৫-৩০ টাকা। আমদানিকৃত পেঁয়াজ ১৮-২০ টাকা কেজি। এছাড়াও দাম বৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে, আমদানি করা আদা, দেশি রসুন, জিরা ও ভোজ্য সয়াবিন। নগরীতে খুচরা বাজারগুলোতে সয়াবিন ফ্রেশ ও তীর (৫ লিটার) ৬৩০ টাকা, পুষ্টি (৫ লিটার) ৫৯৫ টাকা ও রূপচাঁদা (৫ লিটার) ৬৫০ টাকা, লুজ সয়াবিন প্রতি লিটার ১২০-১২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।