শীতের মৌসুম চলে এলেও সিলেটের বিয়ানীবাজারে এবার কোথাও অতিথি পাখির দেখা মিলছে না। জলাশয়, জলাধার, খালবিল, নদীনালা—কোথাও এ বছর অতিথি পাখির কলরব নেই।
১০ বছর আগেও উপজেলার বিভিন্ন বিল, ঝিল, নদীনালা ও খালগুলোতে শীতের মৌসুম আসতে না আসতেই নানা জাতির ও আকৃতির অতিথি পাখির কলরবে মুখরিত হয়ে উঠত পুরো উপজেলা। কিন্তু অরণ্যাঞ্চল সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় পরিযায়ী পাখিরা তাদের গন্তব্য বদলেছে।
বিয়ানীবাজারে গত কয়েক বছর ধরেই বনভূমি উজাড়ের মহোৎসব চলছে। কংক্রিটের ভারে হারিয়ে যেতে বসেছে গাছগাছালি। ফসলের খেতে কীটনাশক ও ঘাস মারার বিষ প্রয়োগের ফলে ঘাসজমির দেখা পাওয়াও এখন অনেকটা দুর্লভ। ফলে প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য হারিয়ে পাখিদের কোলাহল ক্রমেই কমে আসছে।
স্থানীয়রা জানান, এখানকার গ্রামাঞ্চলে এখন আর আগের মতো পাখির ডাকে মানুষের ঘুম ভাঙে না। বাড়ির আঙিনায় পাখিদের কিচিরমিচির ডাক, গাছের ডালে ডালে ঝাঁক বেঁধে উড়ে আসা পাখিদের সেই কলকাকলি আর নেই। অথচ একসময় ছিল যখন গাছে গাছে, ঝোপ-ঝাড়ে, মাঠ-ঘাটে, বিলে-ঝিলে, বাগানে কিংবা বাড়ির আঙিনায় দোয়েল, টিয়া, ঘুঘু, কাক, কোকিলসহ বিভিন্ন দেশি প্রজাতির পাখির বিচরণ চোখে পড়ত।
শীতের আমেজ শুরু হলেই উপজেলার মুড়িয়ার হাওরসহ ছোট-বড় বিলে আগে বিভিন্ন অতিথি পাখির ঢল নামত। আশ্বিন মাসের শেষের দিকে হাওর ও বিলের পানি শুকাতে শুরু করলে সেখানে পুঁটিসহ ছোট ছোট মাছ খেতে ঝাঁকে ঝাঁকে নামত দেশি বকসহ নানা প্রজাতির অতিথি পাখি। জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারিতে শীতের ছোঁয়া গায়ে লাগিয়ে বসন্তে আবারও নিজ দেশে পাড়ি জমাত অতিথি পাখিরা। কিন্তু উপজেলার চিরচেনা অভয়ারণ্যগুলোতেও এবার পাখির বিচরণ নেই। অতিথি পাখি আসার হার আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে।