বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় চলমান একটি প্রকল্প থেকে মৎস্য চাষিদের এ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করার মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এ অর্থ প্রদান করা হবে।
খুলনা বিভাগীয় উপপ্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় চলমান মৎস্য অধিদপ্তরের ‘সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট’ তাদের প্রকল্পভুক্ত উপকূলীয় ১৬ জেলার ৭৮ হাজার চাষিকে এ সহায়তা দিচ্ছে সরকার। তার মধ্যে খুলনা বিভাগের খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর ও বাগেরহাট জেলার ২৭ উপজেলার ৬০ হাজার ৮৮০ চাষি এ অর্থ সহায়তা পাচ্ছেন। উপজেলা থেকে তালিকা প্রস্তুত করে জেলা কার্যালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। তাদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অ্যাকাউন্টে দেয়া হবে এ নগদ অর্থ।
আরও পড়ুন: পুনরায় ৪ দেশে বাজার ফিরে পেয়েছে খুলনার কাঁকড়া
খুলনা জেলার ৯ উপজেলায় ১২০ জন কাঁকড়া চাষি ও ৩০ জন কুঁচিয়া সংগ্রহকারীসহ মোট ৯ হাজার ৮৫৯ জন, যশোরের দুটি উপজেলায় ১ হাজার ৮৩১ জন, বাগেরহাটের ৯ উপজেলায় কাঁকড়া চাষি ১ হাজার ৬৩ জন ও কুঁচিয়া সংগ্রহকারী ১২ জনসহ মোট ২৮ হাজার ৪১৪ জন চাষি এবং সাতক্ষীরার সাত উপজেলায় কাঁকড়া ৫৩৭ জন চাষি ও কুঁচিয়া সংগ্রহকারী ৬৮ জনসহ মোট ২০ হাজার ৭৭৬ জন মৎস্য চাষি এই অর্থ সহায়তা পাবেন।
খুলনার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সহায়তা পাচ্ছেন ডুমুরিয়া উপজেলায়। এ উপজেলায় ১১ জন কাঁকড়া চাষিসহ মোট পাচ্ছেন ৪ হাজার ১১৪ ক্ষতিগ্রস্ত চাষি। প্রাকৃতিক দুর্যোগে চরম ক্ষতিগ্রস্ত কয়রা উপজেলায় পাচ্ছেন ৫৪১ জন চাষি।
এছাড়া বটিয়াঘাটায় ৫৩৩, দাকোপে ৬২৭, রূপসায় ৮৫৪, ফুলতলায় ৯০৩, দিঘলিয়ায় ৬৬৯, পাইকগাছা ১ হাজার ৬১৮ জন চাষির নাম চূড়ান্ত করে পাঠানো হয়েছে।
যশোরের কেশাবপুর ৭৮০ ও মনিরামপুরে ১ হাজার ৫১ জন চাষির তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউরোপে কমলেও, খুলনাঞ্চলের চিংড়ির রপ্তানি বেড়েছে জাপানে
চীনে কাঁকড়া রপ্তানি চালুর দাবিতে সাতক্ষীরায় ব্যবসায়ী ও খামারিদের মানববন্ধন
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পাচ্ছে। এ উপজেলায় ৫ হাজার ৩৭২ জন চাষির নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। সবচেয়ে কম পাচ্ছে কলারোয়া উপজেলায়। এ উপজেলায় ৫২৭ জন চাষি সুবিধা পাচ্ছে।
এছাড়া সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১ হাজার ১৮৭, শ্যামনগরে ৪ হাজার ৮০৫, আশাশুনিতে ৪ হাজার ১৮৪, দেবহাটায় ১ হাজার ৭১২ ও তালায় ২ হাজার ৯৮৯ জন চাষির তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে।
বাগেরহাটে সবচেয়ে বেশি পাবে চিতলমারী উপজেলায়। এ উপজেলায় ৪ হাজার ৬৮৫ জন চাষি এ সহায়তা পাবেন। এছাড়া সদর উপজেলায় ৪ হাজার ৪২, মোল্লাহাটে ৪ হাজার ৪৬২, মোংলায় ২ হাজার ৪৮৮, ফকিরহাট ৪ হাজার ৩২, রামপালে ৪ হাজার ৭৪, মোরেলগঞ্জে ২ হাজার ৪৩৪, কচুয়ায় ১ হাজার ৪৬২ ও সিডরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শরণখোলায় ৭৩৫ জন।
আরও পড়ুন: উৎপাদন ভালো হলেও শঙ্কায় কাঁকড়া ব্যবসায়ীরা
বিগত অর্থবছরে চিংড়ি রপ্তানি বেড়েছে
বিভিন্ন উপজেলার মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, ক্ষতিগ্রস্তদের ছয়টি ক্যাটাগরিতে এ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। সেগুলো হলো- ক্ষুদ্র মৎস্য চাষি, ক্ষুদ্র চিংড়ি চাষি, মাঝারি মৎস্য চাষি, মাঝারি চিংড়ি চাষি, কুঁচিয়া চাষি এবং কাঁকড়া চাষি। সাদা মাছ ও চিংড়ি চাষিদের ঘের অবশ্যই ৩ একরের কম জমিতে হতে হবে। ৩ একরের বেশি জমির ঘের মালিকরা এ প্রকল্পের আওতায় আসবে না। তবে কাঁকড়া চাষির ক্ষেত্রে জমির কোন বাধ্যবাধকতা নেই। আর কুঁচিয়া সংগ্রহকারীরা সরঞ্জামাদি মেরামতের জন্য এই সুবিধা পাবেন।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. খালেদ কনক বলেন, ‘চিংড়ি খাদ্য, রেণু ক্রয় বাবদ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে চাষিদের এ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে করোনা পরিস্থিতিকালীন ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা তাদের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে উঠতে পারবে বলে আশা করি।’