অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য ও পর্যটন মন্ত্রী ডন ফ্যারেল বেইজিং সফরের সময় চীনের সঙ্গে প্রায় দশকব্যাপী চির ধরা সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে অগ্রগতি করছেন বলে আশা করা হচ্ছে।
শুক্রবার ফ্যারেল বিভিন্ন বৈঠক ও ব্যবসায়িক সফর করেছেন, লক্ষণগুলো দেখে মনে হচ্ছে সম্পর্কগুলো আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ শুক্রবার সিডনিতে দেওয়া তার বক্তব্যে বলেছেন, উভয় পক্ষকে ‘বোঝাপড়া ও সংলাপ বৃদ্ধি করতে হবে এবং আমি বলেছি যে আমরা যেখানে পারবো চীনের সঙ্গে সহযোগিতা করব, যেখানে আমাদের প্রয়োজন সেখানে আমরা দ্বিমত করব এবং জাতীয় স্বার্থে আমরা এক অপরের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবো।’
আরও পড়ুন: চীন সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক কারাগার: প্রেস গ্রুপ
অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার চীন। ২০২২ সালে তাদের দ্বিমুখী বিনিময় মোট ২৮৭ বিলিয়ন ডলার। চীন সম্প্রতি আবার অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা, তুলা ও তামা আমদানি শুরু করেছে এবং ফ্যারেল তার সফরে বলেছেন যে তিনি অস্ট্রেলিয়ান বার্লির ওপর আরোপিত শুল্ক পর্যালোচনার ব্যবস্থা করবেন।
অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচন এবং বৃহৎ অস্ট্রেলিয়ান-চীনা সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক জীবন ও সামাজিক সংগঠনগুলোতে বেইজিংয়ের কথিত হস্তক্ষেপের অভিযোগের কারণে চীন এই জাতীয় রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে।
যদিও বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, তবে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যুতে পক্ষগুলো অনেক দূরে অবস্থান করছে।
বৃহস্পতিবার তার সফরের সময় ফ্যারেল বলেছিলেন, তিনি আশা করেন যে তার সফর ‘আমাদের সম্পর্ক স্থিতিশীল করার প্রক্রিয়া চালু রাখবে এবং আমাদের সমস্ত বাণিজ্য পার্থক্য সমাধানের জন্য একটি সফল মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।’
ফ্যারেল বলেন, ‘সমস্যাগুলো রাতারাতি ঘটেনি এবং সেগুলো রাতারাতি সমাধানও হবে না।’
এপ্রিল মাসে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেছিলেন যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক একবিংশ শতকের প্রথম দিকের স্তরে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা কম, তখন রাজনৈতিক ও কৌশলগত অগ্রাধিকার থেকে বাণিজ্য আলাদা ছিল।
তারপর থেকে ক্রমে অস্ট্রেলিয়া এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের জন্য চীনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়িয়েছে।
বেইজিং তথাকথিত এইউকেইউএস অংশীদারিত্বে অস্ট্রেলিয়ার অংশগ্রহণের কঠোর সমালোচনা করেছে; যা মূলত দক্ষিণ চীন সাগর,চীনের দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর এবং পূর্ব চীন সাগরে বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান সামরিক উপস্থিতির প্রতিক্রিয়া হিসেবে, অস্ট্রেলিয়া চীনের প্রতিদ্বন্দ্বি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন র সঙ্গে মিলে মার্কিন পরমাণু প্রযুক্তি চালিত আটটি সাবমেরিনের একটি অস্ট্রেলিয়ান বহর তৈরি করে।
আগামী ২৪ মে তথাকথিত কোয়াড দেশগুলোর নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভারত ও জাপানের নেতাদের নিমন্ত্রণ করবে; যে দেশগুলোর সঙ্গে চীনের সক্রিয় স্থল এবং সমুদ্র সীমান্ত বিরোধ রয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাতীয় নিরাপত্তার ভিত্তিতে চীনা কোম্পানিগুলোর কাছে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোসহ বিভিন্ন মূল্যবান সম্পদ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে।
ফ্যারেল আরও বলেছেন, তিনি ফেব্রুয়ারিতে ‘বাণিজ্য সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধারের পথ হিসেবে পারস্পরিক যোগাযোগ উন্নত করার লক্ষ্যে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাওয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।’
চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি অর্জনে চীনকে ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ: আইএমএফ