ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, প্রধান প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোর কৌশলগত বহুপক্ষীয় সংগঠনের অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারকদের উচিত বিশ্বের সবচেয়ে নাজুক মানুষদের সাহায্য করার ব্যাপারে মনোনিবেশ করা।
শুক্রবার বেঙ্গালুরুতে ইন্ডিয়া এনার্জি উইকের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জি-২০ দেশের অর্থমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের প্রতি এ আহ্বান জানান মোদি।
তিনি বলেন, ‘আপনারা এমন একটি সময়ে বিশ্বব্যাপী অর্থ ও অর্থনীতির নেতৃত্বের প্রতিনিধিত্ব করছেন, যখন বিশ্ব গুরুতর অর্থনৈতিক সমস্যার মুখে।’
মোদি বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা, আস্থা এবং প্রবৃদ্ধি ফিরিয়ে আনাটা অনেকটাই আপনাদের ওপর নির্ভর করে, কারণ আপনারা নেতৃস্থানীয় অর্থনীতি এবং বাজার ব্যবস্থার তত্ত্বাবধায়ক।’
মোদি বলেন, বিশ্বের দেশগুলো মহামারির পরে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। যার মধ্যে রয়েছে- স্বল্পমেয়াদী ঋণ, যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতি এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা হ্রাস।
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের বিশ্বের সবচেয়ে নাজুক মানুষদের প্রতি মনোনিবেশ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে জি২০ সম্মেলনে অংশ নিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী
ডিজিটাল মুদ্রা ও অর্থপ্রদান, বিশ্বব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠানের সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তিসহ বিস্তৃত বিষয়গুলোতে আলোচনার জন্য বেঙ্গালুরুতে বৈঠকগুলো করা হয়।
মার্কিন ও ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা এবং ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের ফ্রান্স ও ব্রাজিলের অর্থমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকসহ বিভিন্ন নেতাদের মধ্যে একাধিক বৈঠকও নির্ধারিত ছিল।
তবে ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বিস্তৃত বিষয় সকল আলোচনাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার, ইউএস ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন নিশ্চিত করেছেন যে তিনি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের জন্য এবং মস্কোর যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য আরও শক্তিশালী নিষেধাজ্ঞার জন্য চাপ দেবেন।
জি২০ বৈঠকগুলো নেতাদের তাদের নীতিগুলিকে কীভাবে সমন্বয় করতে হয় তা বিবেচনা করার একটি সুযোগ দেয়।
যুদ্ধ ও অন্যান্য কারণে সৃষ্ট উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টানতে কয়েক দশক ধরে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভসহ অনেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার দ্রুত বাড়িয়ে চলেছে।
করোনা মহামারির পর ভ্রমণ, পণ্য ও পরিষেবার চাহিদা বেড়েছে।
অন্যদিকে, খাদ্য, বাসস্থান, জ্বালানি ও সারের জন্য ক্রমবর্ধমান খরচের বিশাল বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে সাধারণ জনগণের ওপর। বিশেষ করে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জাতীয় ও পারিবারিক উভয় স্তরেই ঋণের বোঝা বেড়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতের জি২০ এজেন্ডা হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক, উচ্চাভিলাষী, কর্মমুখী ও সিদ্ধান্তমূলক: নরেন্দ্র মোদি
উল্লেখ্য, ভারত ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত জি২০-এর প্রেসিডেন্সি ধরে রেখেছে।