ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান আবারও বলেছেন যে গ্যারান্টি বিষয়টি ইরানের জন্য ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিতে ফিরে যাওয়ার আলোচনায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান মার্কিন ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও (এনপিআর) এর সঙ্গে এক সাম্প্রতিক সাক্ষাত্কারে এ মন্তব্য করেন।
বৃহস্পতিবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
আমির-আব্দুল্লাহিয়ান এনপিআরকে বলেছেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ট্রাম্পের মতোই, গত কয়েক মাস ধরে পারমাণবিক আলোচনায় পরোক্ষ অংশগ্রহণের সময়েও ইরানের বিরুদ্ধে মাসে গড়ে এক বা দুটি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি কূটনীতিই সমাধান এবং একটি শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য আমরা আন্তরিক ও অটল।’
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানে পাঠানো চুক্তির খসড়াটিতে প্রচুর পরিমাণে অস্পষ্টতা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইরান ‘একটি চুক্তির বিষয়ে আন্তরিক। তবে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আমেরিকান পক্ষের বাস্তবিক ইচ্ছা ও সাহস আছে কিনা তা আমরা জানি না।’
আরও পড়ুন: বিক্ষোভে অন্তত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে: ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্দী বিনিময়ের বিষয়ে আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেন, তেহরান মনে করে যে বিষয়টি পারমাণবিক চুক্তি থেকে আলাদা এবং এটি সম্পূর্ণ মানবিক।
তিনি আরও বলেন, ‘আমেরিকান পক্ষ তাদের প্রস্তুতি প্রকাশ করলে আমরা বন্দী বিনিময় করতে প্রস্তুত।’
উল্রেখ্য, ২০১৫ সালের জুলাই মাসে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে ইরান পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করে, যা আনুষ্ঠানিকভাবে জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত। এসময় দেশটির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা অপসারণের বিনিময়ে তার পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করতে ইরান সম্মত হয়।
এরপর ওয়াশিংটন চুক্তিটি প্রত্যাহার করে এবং তেহরানের ওপর পুনরায় একতরফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। যার ফলে পরবর্তীতে চুক্তির কিছু শর্ত ভঙ্গ করে ইরান।
জেসিপিওএ-চুক্তিতে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে ভিয়েনায় আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে ২০২২ সালের মার্চ মাসে সেটি স্থগিত করা হয়। পাঁচ মাস বিরতির পর অস্ট্রিয়ার রাজধানীতে সর্বশেষ পরমাণু আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
৮ আগস্ট জেসিপিওএ- চুক্তিতে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে খসড়া সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেশ করে ইইউ। পরে পরোক্ষভাবে ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইইউ’র প্রস্তাবের ওপর এক প্রক্রিয়ায় মতবিনিময় করেছে, যা এখনও পর্যন্ত কোন ইতিবাচক ফলাফল আনতে ব্যর্থ হয়েছে।
আরও পড়ুন: অস্থিরতার মধ্যে ইরাকে জঙ্গি গোষ্ঠীর ওপর ইরানের হামলা
হিজাব ইস্যু: ইরানিদের ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ