রুশ আগ্রাসনের কারণে ইতোমধ্যে প্রায় ৪০ লাখ লোক শরণার্থী হিসেবে ইউক্রেন ছেড়েছে। তবে সম্প্রতি শরণার্থীর ঢল কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দেশটির বর্ডার গার্ড ও বিভিন্ন সাহায্যকারী সংস্থা এসব তথ্য জানিয়েছে।
এছাড়া দেশের পক্ষে যুদ্ধ করতে কিছু ইউক্রেনীয়কে তাদের দেশে আটকে রাখা হয়েছে, কেউ কেউ আবার নিজেদের বাড়ি ছাড়লেও শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ কোনদিকে আগায় তা বোঝার জন্য দেশের অন্য প্রান্তে বসে অপেক্ষা করছে। কিছু বয়স্ক ও অসুস্থব্যক্তি এবং কিছু মানুষ নিজ ইচ্ছায়ই এখনও নিজেদের বাড়িতেই রয়ে গেছে।
২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া রুশ আগ্রাসনের পর বোমা হামলা থেকে বাঁচতে প্রথম দুই সপ্তাহেই ইউক্রেনের যুদ্ধ-পূর্ব জনসংখ্যার চার কোটি ৪০ লাখের মধ্যে প্রায় ২৫ লাখ দেশ ছেড়ে চলে যায়।
সোমবার জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) ঘোষিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, মোট শরণার্থীর সংখ্যা এখন ৩০ লাখ ৮৭ হাজারে পৌঁছেছে।
তবে, আগের ২৪ ঘন্টায় শুধুমাত্র ৪৫ হাজার মানুষ ইউক্রেনের সীমানা অতিক্রম করেছে।
আরও পড়ুন: নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত জেলেনস্কি
পোলিশ সীমান্ত রক্ষীদের একজন মুখপাত্র আনা মিচালস্কা বলেন, যারা যুদ্ধ শুরু হলে চলে যাওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল তারা প্রথম দিকেই দেশ ছেড়েছে।
ইউএনএইচসিআর বলেছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে খারাপ শরণার্থী সংকটের সূত্রপাত করেছে এই যুদ্ধ। পোল্যান্ড, রোমানিয়া, মলদোভা, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়ায় বিপুল সংখ্যক ইউক্রেনীয় আশ্রয় নিয়েছে। শুধুমাত্র পোল্যান্ডেই ২৩ লাখ শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। অন্যদিকে রোমানিয়ায় রয়েছে প্রায় ছয় শরণার্থী। এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সিরিয়ায় ১১ বছর ধরে চলা বিধ্বংসী যুদ্ধেও এত দ্রুত, এত অধিক সংখ্যক শরণার্থী সংকট তৈরি হয়নি।
পোল্যান্ডে ইউএনএইচসিআর-এর জ্যেষ্ঠ জরুরি সমন্বয়কারী অ্যালেক্স মুন্ড বলেছেন, আমরা আশা করি নতুন করে শরণার্থীর ঢল হ্রাস পাবে। তবে আমি বিশ্বাস করি যুদ্ধের একটি রাজনৈতিক সমাধান না হওয়া পর্যন্ত, এটা হওয়ার কোনও গ্যারান্টি আছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাও (আইওএম) অনুমান করেছে, ইউক্রেনের আরও ৬৫ লাখ মানুষ রুশ আগ্রাসনের ফলে তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত হয়েছে, কিন্তু তারা দেশের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত হয়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন: দোহা ফোরামে জেলেনস্কির ভিডিও বার্তা