বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বৈশ্বিক ঋণ সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আই্মেএফ) কাছ থেকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ পাওয়ার জন্য সফররত প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রথম দফা সংলাপ সন্তোষজনক ছিল।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বৃহস্পতিবার বৈঠকে যে অগ্রগতি হয়েছে তাতে তারা খুবই আশাবাদী।
তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘আজকের বৈঠক সফলভাবে শেষ হয়েছে। প্রথম পর্যায়ের আলোচনা খুবই সন্তোষজনক ছিল। উভয় পক্ষই একে অপরকে সহযোগিতা করেছে এবং আইএমএফ দল এখন পরিস্থিতি জানে।’
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে আইএমএফ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের বাস্তব পরিস্থিতি এবং সামষ্টিক অর্থনীতির অবস্থা বুঝতে চায়।
আরও পড়ুন: মূল সুদের হার বাড়াল শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, ডেপুটি গভর্নর কাজী সায়েদুর রহমান ও আহমেদ জামাল, প্রধান অর্থনীতিবিদ মো. হাবিউর রহমান।
আজাদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সর্বশেষ তথ্যসহ আইএমএফ দলের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, আইএমএফ দল রিজার্ভের বিষয়েও স্পষ্ট তথ্য চেয়েছিল। কারণ বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের প্রকৃত পরিমাণ গণনা করার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছে।
বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমান রিজার্ভ প্রায় ৩৫ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি রিজার্ভ গণনার জন্য আইএমএফের মান অনুসরণ করে, তবে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ২৭ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার।
আরও পড়ুন: জ্বালানি সংকটে শ্রীলঙ্কায় আরও এক সপ্তাহ স্কুল বন্ধ
আইএমএফ দল বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল বা এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের (ইডিএফ) জন্য ব্যয় করা ৭-৮ বিলিয়ন ডলার এবং শ্রীলঙ্কাকে দেয়া ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ বাদ দিতে বলেছে।
যদিও বিশ্বের বেশিরভাগ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আইএমএফের ব্যালেন্স অব পেমেন্টস এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ অবস্থান ম্যানুয়াল অনুযায়ী গণনা করা হয়; বাংলাদেশ নেট ও মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গণনা করে। ইডিএফসহ বিভিন্ন তহবিলে প্রদত্ত তহবিলগুলো নেট গণনা থেকে বাদ দেয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভের নেট বা মোট হিসাব প্রকাশ করে।
বৃহস্পতিবারের আলোচনা ছয়টি অধিবেশনে বিভক্ত ছিল। যার মধ্যে তিনটি অধিবেশনে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে আলোচনা হয়।
এছাড়াও বৈঠকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সুশাসন, ব্যাংকিং খাতের কর্মক্ষমতা, বিনিময় হার, আন্তঃব্যাংক ঋণ, রপ্তানি পরিস্থিতি, আমদানি সীমাবদ্ধতা এবং এফডিআই প্রক্ষেপণ এবং দীর্ঘমেয়াদি খেলাপি ঋণ নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন: গুলিবিদ্ধ শিনজো আবে মারা গেছেন