হিরো আলমকে অনেকেই জানেন, চেনেন, নানা কারণে। তবে সবাই যে তাকে পছন্দ করেন তা নয়। কিছু মানুষ তো মনে করেন যে তিনি নিশ্চয় ‘গান বিরোধী কোনো চরমপন্থী দলের সদস্য’। বেশ বেসুরো কণ্ঠে গান গেয়ে থাকেন, অথচ সেগুলো পাবলিক শোনে। অনেকেই তাকে পছন্দ করে, অনেকেই মজা পাওয়ার জন্য তাকে শোনে, দেখে। তবে এটা ঠিক যে তিনি জনপ্রিয়, তার কাজকর্ম নজর কাড়ে। আর সেটাই তো চাই!
আলমের লাল শাড়ি
ইদানিং হিরো আলমকে লাল শাড়ি, চুড়ি-গহনা পরে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। বোঝাই যায় তিনি কোনো চমক দেখাবেন এবং সেটি হচ্ছে একটি মিউজিক ভিডিও। হিরো আলম জানিয়েছেন, এই ভিডিওর শিরোনাম ‘ভাইরাল বউ’। বানাচ্ছে সরদার প্রোডাকশন। ফেসবুকে এখন তার ছবি ঘুরছে।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আলম লাল শাড়ির সঙ্গে লাল ব্লাউজ পরেছেন। কপালে লাল টিপ আর ঠোঁটে লাল লিপস্টিক। আর কাঁধে নিয়েছেন একটি লেডিস ব্যাগ। এ ব্যাপারে হিরো আলমের ভাষ্য, ‘আপনারা আমাকে নতুন রূপে দেখছেন। সবাই জানেন, হিজড়ারা কতটা অসহায়। তাদের সেই জীবনের গল্প নিয়ে এবারই প্রথম মেয়ে সেজে অভিনয় করছি। সামনে ভালো কিছু করার ইচ্ছা আছে। আপনাদের ভালোবাসা ও দোয়া চাই।’ বোঝা যাচ্ছে ‘হিজড়া আলমে’র সাহস আছে!
হিজড়া হয়ে রুজি !
তবে এটা ঠিক যে হিজড়াদের নিয়ে আমাদের ইদানিং আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। তাদের নিয়ে বেশ কিছু সংগঠন কাজ করছে। শুধু তাই নয়, খবর এসেছে যে চাঁদপুরে বেশ কিছু যুবক হিজড়া হয়েছে এবং প্রতিদিন হিজড়াদের সংখ্যা বাড়ছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেলো, এর পিছনে মূল কারণ অর্থনৈতিক। সেখানে ইউএনডিপি হিজড়াদের কল্যাণে একটি প্রকল্প নিয়েছে, তাই লাইন এত বড় হয়েছে। এই প্রথার ইতিহাস কিন্তু দীর্ঘদিনের। রাজ দরবারে চাকরির আশায় এক সময় স্বেচ্ছায় হিজড়া হয়েছে অনেকে। সেই ধারা এখনো চলছে কিছুটা হলেও।
রুজিই শেষ কথা ?
রুজির সংকট বড় সংকট। তাই যদি একটা ব্যবস্থা হয়ে যায়, সেই চিন্তা থেকে অনেকেই হিজড়া হতে রাজি হবে। এতে অনেকে গালি দিতে পারেন, কিন্তু এতে দোষের কী আছে ? চুরি, ডাকাতি, স্মাগলিং, দুর্নীতি, টাকা মেরে দেয়ার চেয়ে তো এইসব অনেক উত্তম।
বাংলাদেশের বহু মানুষ যারা বিদেশে পাড়ি জমায় তারা যে কী কষ্ট করে যায়, থাকে ও টাকা পাঠায়, যারা করে তারাই জানে। তারা নিজেরাই সেধে যায়, নিজেরাই দালাল সন্ধান করে, টাকা দেয়, কষ্ট করে। হিজড়া হতে বরং সাহস লাগে, কারণ কিছু তো খোয়াতে হয়। তবু এটা হচ্ছে।
যারা হিজড়া তারা অসহায় , যারা গান বানায় তারা অসহায়, যারা বিপদ জেনেও বিদেশ যেতে সাগর পাড়ি দেয় তারাও অসহায়... তবে এর মধ্যেও এক ধরণের সাহস আছে। যা করার দরকার করবো, তবু রুজির একটা ব্যবস্থা করতে হবে। তবে এর মধ্যে বিপদও আছে। কারণ একই যুক্তি দিয়ে অনেকে অপরাধ করে। তাহলে কি শেষ পর্যন্ত রুজিই শেষ কথা?
লেখক: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি