রাজনৈতিক সংকট নিরসনের ক্ষমতা না থাকায় নির্বাচন কমিশনের অনানুষ্ঠানিক আলোচনার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি।
তবে বিএনপিকে আলোচনার আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি পাঠানোর জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালকে ধন্যবাদ জানিয়েছে দলটি।
বুধবার গুলশানে দলের চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বিষয়ে তাদের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তের কথা জানান।
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুল কি জিয়ার লাশ দেখেছেন: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, মঙ্গলবার তাদের দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছে। এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পক্ষ থেকে বিএনপিকে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা ও মতবিনিময় সভার আমন্ত্রণ জানিয়ে দলের মহাসচিবের কাছে পাঠানো চিঠি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ফখরুল বলেন, আমাদের স্থায়ী কমিটির বৈঠক মনে করে যে-নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে মূল রাজনৈতিক সংকটের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কোনও আলোচনা বা সংলাপ ফলপ্রসূ হবে না।
তিনি আরও বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন প্রমাণ করেছে যে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নয়। এমনকি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে চাইলেও সেই ক্ষমতা তাদের নেই।
ফখরুল বলেন, আমাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে বিএনপি নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব (অনানুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য) গ্রহণ করতে পারছে না।কারণ কমিশনের সঙ্গে এ ধরনের আলোচনা ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে মূল রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের কোনও সম্ভাবনা নেই।
২৩ মার্চ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ফখরুলকে একটি ডেমি-অফিসিয়াল চিঠি পাঠিয়ে বিএনপিকে আগামী জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার জন্য মতবিনিময় সভায় আমন্ত্রণ জানান।
বর্তমান ইসি গত বছর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে দুই দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করলেও বিএনপি ও জোটের শরিকরা কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, তারা দলীয় সিদ্ধান্ত জানিয়ে ইসিকে কোনো চিঠি পাঠাবেন না। তিনি আরও বলেন, আমি এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাকে (সিইসি) আমাদের সিদ্ধান্তের কথা জানাচ্ছি। আমি আশা করি তিনি আমাদের মতামত গ্রহণ করবেন।
আরও পড়ুন: জাতীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা’র সঙ্গে জয় বঙ্গবন্ধু অন্তর্ভুক্তি চেয়ে হাইকোর্টে রিট
ইসি ক্ষমতাহীন
আরেক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, আমার দেশ ও জনগণের সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের নেই। তাই এমন ইসির সঙ্গে বসে কোনও লাভ নেই।
বিএনপি নেতা বলেন, সিইসি কোনও ডাকঘর নন যে আমরা সরকারকে দেওয়ার জন্য তাকে চিঠি দেব। এটা একেবারেই সরকারের ব্যাপার। যেহেতু সংসদে সরকারের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, তাই এটা করতে পারে, অন্য কেউ এই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।
তিনি বরেন, নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে বসতে পারে বিএনপি। এছাড়া তারা বারবার বলছেন, নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন থাকায় ইসি কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
বিএনপি নেতা বলেন, সুতরাং এটি নিয়ে আলোচনা করতে হবে। এবং সরকারকে এ লক্ষ্যে এগিয়ে আসতে হবে। এই বিষয়টি (নির্বাচনকালীন সরকার) ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে আলোচনায় আমাদের আগ্রহ নেই।
তিনি আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে সরকার আলোচনার কোনো প্রস্তাব দিলে তাদের দল বিবেচনা করবে।
এছাড়া নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের ইস্যু ছাড়া আর কোনো আলোচনা হবে না।