দলের নয়াপল্টন কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। করোনা নিয়ে সরকার তথ্য গোপন করে অতি সামান্য আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ করছে। অথচ প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য নেতা-মন্ত্রীরা নিরাপদে আইসোলেশনে থেকে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন। আর সাধারণ মানুষ বিনা চিকিৎসায় ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন, হাসপাতালের বেড ইত্যাদির অভাবে কাতরাচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ওবায়দুল কাদের সত্য বলতে ভুলে গেছেন: বিএনপি
ঢাকাসহ কোথাও আইসিইউ খালি নেই দাবি করে তিনি বলেন, ‘অক্সিজেনের অভাবে মায়ের কোলেই সন্তান মারা যাচ্ছে। বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে করোনা রোগীকে ফেরত দেয়া হচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সরকারের কোনো দায়িত্ব নেই। সরকার যেন চোখ বুজে ধ্যান করছে।’
মহামারির সময়ে বাংলাদেশ সম্পূর্ণ উল্টো পথে-উল্টো রথে চলছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘সব চলছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের অজুহাতে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ করে রাখা রয়েছে।’
আরও পড়ুন: ইসিকে যোগ্য রেফারির ভূমিকা পালনের আহ্বান বিএনপির
শিক্ষার হাব নামে খ্যাত দেশগুলোতে আজকের বাস্তবতায় অটো পাস দেয়া হয়নি এবং সকল দেশেই শিক্ষার্থীর মেধার মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষার বিকল্প শুধু পরীক্ষাই রাখা হয়েছে জানিয়ে বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন যে বাংলাদেশে অটো পাস আর ফটোকপির পাস করিয়ে সরকার একটি প্রজন্মকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: ভাস্কর্য ভাঙার পেছনে বিএনপির উসকানি আছে কিনা খতিয়ে দেখছি: কাদের
‘দেশের লক্ষ কোটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের কোনো ভিশন নেই বলেই লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী অন্ধকারের অতল গহব্বরে তলিয়ে যাচ্ছে। অথচ অফিস, আদালত, শিল্প, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন সবকিছুই খুলে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে জ্যামিতিক হারে,’ বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত নয়: কর্মীদের প্রতি বিএনপি মহাসচিব
গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার- এ মূলমন্ত্রে সারা জাতি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। আমরা বিজয়ী হয়েছিলাম। বিজয়ের এ পঞ্চাশ বছরের যাত্রাকালে দেখছি রাষ্ট্র ও সমাজে আবারও একদলীয় কর্তৃত্ববাদী নিষ্ঠুর শাসনের উত্থান এবং বেপরোয়া দুর্নীতির উন্নয়নের মহামারি।’
তিনি অভিযোগ করেন যে সরকার ব্ল্যাক-আউট করে দিয়েছে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার। নিরুদ্দেশ হয়েছে গণতন্ত্র। ভোটাধিকার, মানবাধিকার অন্ধকার গোরস্থানে শায়িত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জেনে শুনে ও বুঝে মিথ্যাচার করা বিএনপির স্বভাব: কাদের
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের উদাহরণ দিয়ে রিজভী বলেন, ‘আমেরিকার ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট অসীম ক্ষমতার অধিকারী হলেও দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো দেখিয়েছে আইনগত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলো প্রেসিডেন্টের চেয়েও শক্তিশালী, স্বাধীন ও স্বতন্ত্র। অথচ বাংলাদেশে ঠিক এর উল্টো চিত্র। নিজেদের সাংবিধানিক দায়িত্ব ভুলে গিয়ে সাংবিধানিক ও বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলো পরিণত হয়েছে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনে।’