ফখরুল বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) উন্নতমানের হাসপাতালে সেবা নিতে চান বলে আমাদের খবর পাঠিয়েছেন। এখন তিনি কোনো চিকিৎসাই পাচ্ছেন না।’
বিএসএমএমইউতে খালেদার সাথে তার আত্মীয়দের সাক্ষাতের একদিন পর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আপিল বিভাগ বিএনপি প্রধানকে উন্নত চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশনা দিলেও বিএসএমএমইউতে সেই চিকিৎসার সুযোগ নেই বলে আমরা জানি। বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই উন্নত চিকিত্সার জন্য এখন তাকে উন্নতমানের হাসপাতালে পাঠানো দরকার এবং এটাই একমাত্র উপায়।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের সিনিয়র নেতারা খালেদা জিয়ার প্রকৃত অবস্থা দেখার জন্য তার সাথে দেখা করার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বহুবার চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু মন্ত্রণালয় এতে কোনো সাড়া দেয়নি।’
ফখরুল বলেন, তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে তাদের চেয়ারপার্সনের সাথে দেখা করার অনুমতি চেয়ে আরো একটি চিঠি পাঠাবেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা অনেকদিন ধরেই বলে আসছি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে জেলে রাখা হচ্ছে। এখন মনে হচ্ছে তারা খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা জানিও না সরকারের উদ্দেশ্য কী।’
খালেদাকে শিগগিরই জামিন দিয়ে উন্নত চিকিৎসা নেয়ার সুযোগের দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, হাসপাতালে তার কিছু হলে এর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে এবং জনগণের কাছে সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে।
রবিবার খালেদার ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান, নাতনি জাহিয়া রহমান, তার বোন সেলিমা ইসলাম এবং আরো তিন আত্মীয় তাকে দেখতে বিএসএমএমইউতে যান।
সাক্ষাৎ শেষে সেলিমা ইসলাম বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ‘দ্রুত অবনতি’ হচ্ছে এবং সরকার জামিন ও চিকিৎসা না দিয়ে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে কারাগারে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে।
খালেদা জিয়া তার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘তার (খালেদা) শারীরিক অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। তার সুগার লেভেল এখন ১৮। হাত এবং পায়ে প্রচণ্ড ব্যথায় ভুগছেন। তার বাম হাতের অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে।’
‘মনে হচ্ছে তারা (সরকার) তাকে জামিন না দিয়ে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। তার অবস্থা এতটাই মারাত্মক যে তিনি উঠতে ও বসতে পারছেন না,’ যোগ করেন সেলিমা।
দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে রয়েছেন খালেদা জিয়া। গত বছরের ১ এপ্রিল থেকে তিনি বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন আছেন।