বুধবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা আশা করব উচ্চতর আদালত সব চাপকে উপেক্ষা করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে এবং জনগণের নেত্রী জনগণের মাঝে ফিরে আসবেন।’
বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও আশা প্রকাশ করেন যে দুর্নীতির দুই মামলায় খালেদা জিয়ার জামিনে সরকার আর কোনো কারসাজি করবে না বা বাধা দেবে না।
মঙ্গলবার মানহানির দুই মামলায় হাইকোর্ট থেকে ছয় মাসের জামিন পান খালেদা জিয়া। তবে তাকে কারামুক্ত হতে হলে আরও দুই মামলা- জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় জামিন পেতে হবে।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পাওয়ার পর থেকে বন্দী রয়েছেন বিএনপি প্রধান। পরে তিনি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও সাজা পান। সেই সাথে হাইকোর্ট জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার কারাদণ্ডের মেয়াদ দ্বিগুণ করে।
রিজভী দাবি করেন যে সরকার আদালতকে ‘প্রভাবিত’ করায় এ দুই মামলায় খালেদা জিয়া সাজা পেয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক মন্তব্যে বোঝা যায় যে সরকারের বাধার কারণেই খালেদা জিয়া জামিনযোগ্য মামলায় জামিন পাচ্ছেন না।
‘সরকার যদি খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রশ্নে কোনো হস্তক্ষেপ না করে তা হলে তার জামিন হবে এবং তিনি মুক্তি পাবেন। কালবিলম্ব না করে সামনে আরও দুটি বানোয়াট মামলায় দেশনেত্রীর জামিন নিশ্চিত হলে উচ্চতর আদালতের ওপর মানুষের আস্থা আরও বৃদ্ধি পাবে,’ যোগ করেন তিনি।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনের পঞ্চম ও শেষ ধাপ নিয়ে রিজভী বলেন, নির্বাচনে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা ‘ন্যক্কারজনক’ ভূমিকা পালন করেছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, ২০ উপজেলার সবখানে আওয়ামী লীগের বিরোধী প্রার্থীদের ঠেকানোর জন্য পুলিশের ভূমিকা ছিল দলীয় ক্যাডারের মতো।
গুম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির এ নেতা অভিযোগ করেন যে ক্ষমতাসীন দলের কোনো ব্যক্তির সাথে যদি কারও ন্যূনতম মনোমালিন্য হয় তবে তিনি যেকোনো মুহূর্তে গুম হয়ে যেতে পারেন। ‘ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে যারা গুমের দায়িত্বে আছেন তাদের সাথে চুক্তি করে প্রতিপক্ষকে অদৃশ্য করাচ্ছেন।’
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজের ভাগ্নে গুম হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, এ ঘটনা গোটা জাতিকে আতঙ্কিত ও শিহরিত করে তুলেছে।
বিএনপির এ নেতা দাবি করেন, সরকার যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার চেষ্টা করছে বলে বাংলাদেশ আজ গুম-খুনের লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে।