বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকারের জন্য বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার কোনো বিকল্প নেই।
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আ স ম হান্নান শাহ স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নানের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সরকার দেশের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে শুধুমাত্র আগামী নির্বাচনে ডিজিটালভাবে ভোট কারচুপির জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে আরও ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) সংগ্রহের চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, দেশে এখন স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ নিজেদের শাসনকে সুসংহত করতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান, গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধার করতে এই শাসনব্যবস্থার পতন ঘটাতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না যে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব। এ কারণেই বিএনপি আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে করার দাবি তুলেছে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ ‘বিদেশিদের’ পরামর্শের ওপর নির্ভর করছে না: খন্দকার মোশাররফ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপের বিরোধিতা করে মোশাররফ বলেন, মানুষ যখন নিজের হাতে ভোট দিতে চায় কমিশন তাদের মেশিন ব্যবহার করতে বাধ্য করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তারা (সরকার) ২০১৮ সালের মতো রাতে আর ভোট কারচুপি করতে পারবে না। সে কারণেই তারা এখন ইভিএম ব্যবহার করে ভোট ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দুর্ভিক্ষের মতো’ পরিস্থিতির মধ্যে যখন দেশের মানুষ তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা করতে পারে না। তখন আট হাজার কোটি টাকা খরচ করে ইভিএম কেনার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি আরও বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মানুষ বেঁচে থাকতে হিমশিম খাচ্ছে এবং তারা গ্রামীণ এলাকায় ৮-১০ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের সম্মুখীন হচ্ছে…এমন পরিস্থিতিতে তারা (সরকার) ইভিএমের জন্য এত টাকা খরচ করতে যাচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ সরকারকে আবার ক্ষমতায় বসতে দিলে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই দেশ এবং এর অর্থনীতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।’
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ করেন মোশাররফ।
তিনি বলেন, ‘তারা রক্ষীবাহিনী গঠন করে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে এবং এভাবে দেশে হত্যার রাজনীতির সূচনা করেছে। তারা ১৪ বছর ধরে বলপ্রয়োগ করে ক্ষমতায় আছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গিয়ে বলেছেন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের হাওয়া বইছে।’
তিনি বিএনপিতে হান্নান শাহের অবদান এবং ২০০৭ সালে ১/১১-এর রাজনৈতিক পরিবর্তনের সময় গণতন্ত্রের পক্ষে তার ভূমিকার কথা স্মরণ করেন।
আরও পড়ুন: বর্তমান ইসির সঙ্গে বিএনপি সংলাপে যাবে না: খন্দকার মোশাররফ
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ইমামদের বড় ভূমিকা রয়েছে: খন্দকার মোশাররফ