গত ৭ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসায় এখন থেকে কেউ দেশের অগ্রযাত্রায় বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, 'যেহেতু আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এসেছে, তাই বাংলাদেশের বর্তমান অগ্রগতিকে আর কেউ ব্যাহত করতে পারবে না।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিদেশি বন্ধুদের অভিনন্দন
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই সমাবেশের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, অনেকে এই নির্বাচন বন্ধ করতে চেয়েছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে।
আওয়ামী লীগ ও তার সমমনা দলগুলো যখন নির্বাচনে যোগ দেয় তখন একটি বিশেষ দল নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করার পরও এই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ।’
তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ায় তা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে না।
আরও পড়ুন: জনগণের কল্যাণই আপনাদের সর্বোচ্চ দায়িত্ব: দলের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, 'কেউ বলতে পারবে না যে, এই নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে হয়েছে। নির্বাচন অত্যন্ত স্বচ্ছ, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ায় ভোট কারচুপি হয়েছে এমন কিছু বলার ক্ষমতা কারও নেই।’
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার কখনই নির্বাচন কমিশনে হস্তক্ষেপ করেনি, বরং সহায়তা করেছে।
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসিকে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করার জন্য সশস্ত্র বাহিনীসহ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি।
২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ভিশন পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে এখন আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না।
আরও পড়ুন: একটানা চতুর্থবারের মতো সংসদ নেতা নির্বাচিত হলেন শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের শক্তি একটি বড় শক্তি, যা আবারও প্রমাণিত হয়েছে।
সমালোচকদের কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, সামরিক স্বৈরশাসকরা যখন ভোট কারচুপি করে ক্ষমতায় এসেছিল তখন তারা নীরব ছিল। ‘কিন্তু এখন যখন আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি, তখন তারা আমাদের গণতন্ত্র ও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’
'আমরা গণতন্ত্রকে সুসংহত করেছি;’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে দীর্ঘদিন ধরে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকায় আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে, দারিদ্র্যের হার কমেছে এবং মাথাপিছু আয় বেড়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বতঃস্ফূর্তভাবে তার দলকে ভোট দেওয়ায় বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হলেও কম ভোটে জয় আ.লীগের
বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, তারা ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সরকার তাদের প্রচারণায় বাধা দেয়নি।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে এবং শত প্রতিবন্ধকতা ও ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে এই নির্বাচন গ্রহণ করেছে...... গ্রামাঞ্চলেও জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে।’
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ভাষণ একটি ঐতিহাসিক দলিল।
তিনি বলেন, 'জাতির পিতা তার ভাষণে ভবিষ্যতে স্বাধীন বাংলাদেশ কীভাবে চলবে সে বিষয়ে সব দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন।’
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের অভিনন্দন
সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
গত ৭ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের মধ্য দিয়ে পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে যাওয়ায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ওবায়দুল কাদের।
বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের কারাগারে ২৯০ দিন বন্দি থাকার পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি লন্ডন ও নয়াদিল্লি হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
আরও পড়ুন: মন্ত্রিসভা গঠনে শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি