বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান জানাবে।
শনিবার (১৯ আগস্ট) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয় তাহলে তা দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের নিরাপত্তার জন্য ভালো হবে না।
আমরা অবশ্যই আশা করি, ‘ভারত বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান জানাবে।’ পাশাপাশি তারা সব দলের অংশগ্রহণে এবং সবার কল্যাণে দেশে একটি সত্যিকারের নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য তাদের পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ করবে।
হাসিনা সরকারকে অস্থিতিশীল করার বিভিন্ন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভারতের বার্তার বিষয়ে এক প্রতিবেদক তার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ফখরুল বলেন, 'ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে আমরাও দেখেছি। যদি রিপোর্টটি সত্য হয়, তবে এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’
আরও পড়ুন: সামনে শেখ হাসিনার অনুমতি নিয়ে নামাজ পড়তে হবে: বরকত উল্লাহ বুলু
তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যই বাংলাদেশের বর্তমান সব সংকটের মূল কারণ।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, গত ১৫ বছর ধরে রাষ্ট্র কর্তৃক বাংলাদেশের জনগণের উপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালানো হয়েছে।
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে একটি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস সৃষ্টি হয়েছে এবং বলা যেতে পারে দেশে গভীর সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, যদি এই খবরটি সত্য হয় তবে এটি ভারতের মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত, যারা সর্বদা গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার কথা বলে।
ফখরুল বলেন, 'আমরা কখনোই এ ধরনের কথা বলব না, কিন্তু আমরা বলতে বাধ্য হচ্ছি, যদি খবরটি সত্য হয়, তাহলে তারা (ভারত) বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ও তাদের শক্তির উপর তাদের দলের আস্থা রয়েছে। ‘আমি মনে করি, বাংলাদেশের মানুষ কী চায়, ভারত তা বোঝার চেষ্টা করবে। ভারত যদি বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়, তবে তা হবে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং আমরা মনে করি এটি বাংলাদেশের জনগণের জন্য এবং এই অঞ্চলের জনগণের জন্যও ভালো হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো মৌলবাদী দলের ক্ষমতায় আসার কোনো আশঙ্কা নেই। বাংলাদেশের ৫২ বছরের ইতিহাসে কোনো মৌলবাদী দল কখনো ক্ষমতায় আসতে পারেনি। বরং তাদের শক্তি কমে গেছে।’
এর আগে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে জিয়ার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ফখরুল।
ডয়চে ভেলে ও আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসিনা সরকারকে অস্থিতিশীল করতে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা প্রতিবেশি দেশ হিসেবে ভারতের সামগ্রিক নিরাপত্তা এবং সামগ্রিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার জন্য ইতিবাচক নয়।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমেরিকার বর্তমান ভূমিকা নিয়ে ভারত সন্তুষ্ট নয় এবং ওয়াশিংটনকেও এই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প জনগণের টাকা চুরির আরেকটি কৌশল: ফখরুল