বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন সোমবার অভিযোগ করে বলেছেন, ৭ ডিসেম্বর অভিযানে পুলিশ নয়াপল্টনে তাদের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে টাকা লুটপাটের পাশাপাশি ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ ধ্বংসযজ্ঞ ও ভাঙচুর করেছে।
দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বিএনপি কার্যালয়ের পাঁচ তলা ভবনের প্রতিটি কক্ষ পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিজয়ের মাসে বিএনপি কার্যালয় ভাংচুর ও লুটপাট করেছে পুলিশ। তারা নগ্নভাবে সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে। অপ্রত্যাশিত বর্বরতা।’
আরও পড়ুন: বর্তমান ইসির সঙ্গে বিএনপি সংলাপে যাবে না: খন্দকার মোশাররফ
বিএনপি নেতা বলেন, পুলিশ তাদের দলীয় চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ের প্রথম তলায় দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং ঘরের ভেতরের সবকিছু ভাংচুর করে এবং সব ছবি নষ্ট করে দেয়।
তিনি বলেন, পুলিশ তাদের অফিস থেকে সব সিপিইউ, হার্ডডিস্ক, প্রিন্টারসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে গেছে।
‘আমাদের অ্যাকাউন্ট বিভাগ থেকে সবকিছু লুট করা হয়েছে। নিচতলায় জিয়াউর রহমানের ম্যুরালও ভাঙচুর করা হয়। বিজয়ের মাসে এমন বর্বর ঘটনা কেউ দেখবো বলে আশা করেনি,’ বলেন মোশাররফ।
তিনি অভিযোগ করেন, ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সরকারের আগ্রাসী মনোভাব প্রমাণ করেছে যে এটি একটি ফ্যাসিবাদী, সন্ত্রাসী ও দখলদার সরকার।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘ঘটনার নিন্দা করার মতো উপযুক্ত শব্দ আমাদের কাছে নেই। আমি মনে করি এটি বাংলাদেশে একটি নজিরবিহীন ঘটনা। বিশ্বে এমন নজির নেই…এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সময়ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এ ধরনের হামলা চালায়নি।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের পিঠ এখন দেয়ালে ঠেকেছে, তাই জনগণ আমাদের বার্তা দিয়েছে যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার জন্য বলপ্রয়োগ করে দেশকে ধ্বংস করছে এবং তাদের পক্ষে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, অর্থনীতি মেরামত, নিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। বিচার ব্যবস্থায় এবং আইনশৃঙ্খলা বিভাগে স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, তাদের পক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানো অসম্ভব। তাই বাংলাদেশের জনগণ, গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলায় জনগণ এই সরকারের হাত থেকে দেশকে বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর আগে সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর আবদুল মঈন খান ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ কয়েকজন বিএনপি নেতাকে নিয়ে মোশাররফ দলীয় কার্যালয়ে যান।
এদিকে গত ৭ ডিসেম্বর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মকবুলের পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে।
মকবুলের স্ত্রী হালিমা আক্তার বিএনপি নেতাদের কাছ থেকে এক লাখ টাকা পেয়েছেন। আর মেয়ে মিথিলার পড়াশোনার দায়িত্ব নেন ঢাকা উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক।
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের আহ্বান খন্দকার মোশাররফের
সরকার স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে জনগণ বাধ্য করবে: খন্দকার মোশাররফ