আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০টি আসনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্তকে ক্ষমতাসীন সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন উল্লেখ করে প্রত্যাখান করেছে বিএনপি।
বুধবার নয়াপল্টনের দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এসময় নির্দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে প্রচলিত ব্যালট ব্যবহার করে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে তাদের দাবির কথা পুনঃব্যক্ত করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান কমিশনের প্রতি আমাদের কোন আগ্রহ নেই। তারা কি বলে আর করে তা আমরা আমলে নেই না। মূল বিষয় হলো নির্বাচনকালীন সময়ে যদি সরকার পরিবর্তন না হয়, তাহলে কোন নির্বাচন কমিশন বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারবে না।’
ফখরুল আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে তারা ক্ষমতাসীন দলের অংশীদার। ‘কারণ, আওয়ামী লীগ চেয়েছিল ৩০০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হউক, সেখানে ইসি সমঝোতার মাধ্যমে ১৫০ আসনে করবে।’
নির্বাচন কমিশনের সংলাপকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল এমনকি জাতীয় পার্টিও কমিশনকে বলেছিল যে তারা ইভিএম চায় না, কারণ মেশিন ব্যবহারের ফলে জনগণের রায় প্রতিফলিত হয় না।
রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধিতা সত্ত্বেও বর্তমান অবৈধ নির্বাচন কমিশন কেবলমাত্র বর্তমান সরকারের ইচ্ছাপূরণ এবং চূড়ান্তভাবে পূণরায় আওয়ামীলীগের সরকার গঠনের লক্ষ্য পূরণে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা তো না..ই বরং জনগণও তা কখনো মেনে নেবে না। আমরা এটিকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখান করছি।
তিনি দলের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বাংলাদেশে কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। ‘বর্তমান সরকারকে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করা ও একদলীয় শাসন কায়েম করার ব্যর্থতার দায় নিয়ে অবিলম্বে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে। এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।’
তিনি বলেন, এরপর গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। ‘সম্পূর্ণ ব্যালটের মাধ্যমে ওই নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হবে।’
বুধবার সকালে নির্বাচন কমিশন আগামী বছরের শেষে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের পাশাপাশি ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সারাদেশের ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
রাজধানীর আগারগাঁয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে কমিশনের বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে বিএনপির সমাবেশস্থলে আ.লীগের সমাবেশ, ১৪৪ ধারা জারি