খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের জোড়শিং গ্রামের এক পল্লী চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথিমধ্যে আংটিহারা নামক স্থানে শিশুটির মৃত্যু হয়।
নবজাতকের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে মো. নুরুজ্জামের স্ত্রী ডলি খাতুন তার নিজ বাড়িতে একটি নবজাতক প্রসব করেন। প্রসবের পর নবজাতক ও নবজাতকের মা দুজনই সুস্থ ছিল। কিন্তু গত শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে নবজাতকের শরীরে জ্বর দেখা দিলে একই এলাকার নগেন্দ্র নাথ নামের এক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের চিকিৎসা নেন। কিন্তু শারীরিক অবস্থার কোন পরিবর্তন না হলে ওই চিকিৎসককে বিষয়টি পুনরায় জানানো হয়। তখন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের ছেলে পল্লী চিকিৎসক দীলিপ মন্ডলকে বিষয়টি দেখার জন্য নবজাতকের বাড়িতে পাঠান। শারীরিক অবস্থা দেখে সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে পল্লী চিকিৎসক দীলিপ মন্ডল নবজাতকের শরীরে ২টা ইনজেকশন পুশ করে চলে যান। ইনজেকশন পুশের পর সকাল ৮টার দিকে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে। বিষয়টি পল্লী চিকিৎসক দীলিপকে পুনরায় জানানো হলে তিনি আর আসেনি। সে সময় শিশুটির পরিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে আংটিহারা গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছালে নবজাতকের মৃত্যু হয়।
পড়ুন: বরগুনায় ভুল চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যু, কথিত ‘চিকিৎসক’ কারাগারে
নবজাতকের চাচা সুজাউদ্দীন জানান, আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী গত বৃহস্পতিবার একটি পুত্র সন্তান প্রসব করে। পুত্র সন্তান জন্ম নেয়ায় আমরা সকলে খুব খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু সে খুশি বেশি সময় স্থায়ী হলো না। ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় সব মুহূর্তে শেষ হয়ে গেল।
অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক দিলিপ বলেন, আমি অতিরিক্ত জ্বরের জন্য ট্রাজিট ১২৫ এমজির ২টা ইনজেকসন পুশ করি। তবে হঠাৎ নিউমনিয়ার চাপ দেয়ায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলেন, নবজাতকের মৃত্যুর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। পল্লী চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার ব্যাপারে তদন্তপূর্বক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রবিউল হোসেন বলেন, ‘নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি জেনেছি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন: সন্তানের মুখ দেখা হলো না মায়ের, ভুল চিকিৎসার অভিযোগ