সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হেমায়েতপুর-সিংগাইর সড়কে এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২০ জন।
নিহত ইজিবাইক চালক শাহ আলমের বাড়ি (২৫) সিংগাইর উপজেলার আঙ্গারিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: ফতুল্লায় বাস-ইজিবাইক সংঘর্ষে নিহত ২
সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হেমায়েতপুর-সিংগাইর সড়কের কিটিংচর এলাকায় ঘন কুয়াশার মধ্যে ঢাকাগামী একটি বাসের সাথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ইজিবাইকের মুখেমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ইজিবাইকটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। আর বাসটি রাস্তার পাশে খাদের পানিতে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলে ইজিবাইক চালক শাহ আলম নিহত হন। এ সময় ইজিবাইকের অপর চার যাত্রীসহ খাদে পড়া বাসের ২০ জন যাত্রী আহত হন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল নিহত
ওসি জনান, দুর্ঘটনার পর পরই পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মানিকগঞ্জ-সিংগাইর সড়কে নয়াকান্দি এলাকায় ঘন কুয়াশার মধ্যে একটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে পড়ে যায়। এতে মাইক্রোবাসের ছয় যাত্রী আহত হন।
আরও পড়ুন: তিন জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রদলের সাবেক নেতাসহ নিহত ৪
দেশের সড়ক দুর্ঘটনা পরিস্থিতি
দেশের সড়ক ও মহাসড়কে দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা গত নভেম্বরে কিছুটা বেড়েছে। মাসজুড়ে সংঘটিত ৪১৭ দুর্ঘটনায় ৪৩৯ জন নিহত এবং ৬৮২ জন আহত হয়েছেন।
নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করা রোড সেফটি ফাউন্ডেশন নামে এক সংস্থার ৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত নতুন প্রতিবেদনে এ পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০২০ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহত ৭২৯ শ্রমিক: বিলস
সংস্থাটির তথ্যমতে, গত অক্টোবর মাসে ৩১৪ দুর্ঘটনায় ৩৮৩ জন নিহত হন।
গত নভেম্বর মাসে এককভাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। এ ধরনের ১২৮টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৪১ জন। যা মোট নিহতের ৩২.১১ শতাংশ। আর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা মোট ঘটনার ৩০.৬৯ শতাংশ।
আরও পড়ুন: ২০২০ সালে সিলেট বিভাগে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৫০
প্রতিবেদনে দেয়া তথ্যমতে, দুর্ঘটনায় ১১৬ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২৬.৪২ শতাংশ। আর যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৪৯ জন, যা মোট নিহতের ১১.১৬ শতাংশ।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। রাজধানীতে ১১১ দুর্ঘটনায় ১২৮ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ২২ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৪ জন।
আরও পড়ুন: তিন জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যবসায়ীসহ নিহত ৩
দেশে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে ১০ বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এগুলো হলো- ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, নির্দিষ্ট বেতন ও কর্মঘণ্টা না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহণ খাতে চাঁদাবাজি।
সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।