চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন রৌফাবাদ এলাকায় প্রবাসীর স্ত্রী পারভিন আক্তারকে ধর্ষণের পর হত্যা ও ডাকাতির মামলায় ফাঁসির দণ্ডিত পলাতক আসামি মো. ইসহাক (২৭)কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। সোমবার ভোর ৬টায় জেলার রাউজানের সুলতানপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ইসহাক জেলার হাটহাজারীর ফটিকা এলাকার মো. কামাল হোসেনের ছেলে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আরও তিন আসামি পলাতক রয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় চিকিৎসক নিহতের ঘটনায় রিকশাচালক গ্রেপ্তার
তারা হলো- মো. ইয়াছিন, মো. আবু তৈয়ব প্রকাশ রানা (২৪) ও মো. মনসুর (২৫)।
সোমবার বিকালে র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার এসব তথ্য জানান।
পরে র্যাব সংবাদ সম্মেলনে জানায়, ২০১৬ সালের ৫ মার্চ সন্ধ্যা ৭টার দিকে পারভিন আক্তারের ছেলেকে পড়ানো শেষে গৃহ শিক্ষক বাসা থেকে বের হয়। এর পরপরই চারজন লোক বাসায় প্রবেশ করে। এ সময় তারা আলমারির চাবি দিতে বললে ওই নারী চাবি না দিয়ে চিৎকার করার চেষ্টা করে। এতে আসামিরা ওই নারীর মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। পরে বিছানা থেকে মেঝেতে ফেলে দেয়। আসামিরা ওই নারীকে হাত, পা বেঁধে রাখে এবং পরিকল্পিতভাবে মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে হত্যা করে। বাসা থেকে স্বর্ণলংকার, মোবাইল, ট্যাব এবং নগদ টাকা নিয়ে চলে যায়। পরে ওই নারীর স্বামী প্রবাসী মো. নুরুল আলম (৪৫) ওই বছরের ৭ মার্চ বাদী হয়ে চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানায় হত্যা মামলা করেন।
র্যাব আরও জানায়, মারা যাওয়া ওই নারীর স্বামী প্রবাসী মো. নুরুল আলম ও তার বড় ভাই আব্দুস শুক্কুরের যৌথ মালিকানায় বায়েজিদ বোস্তামির রৌফাবাদস্থ বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটিতে ৬ষ্ঠ তলা বিশিষ্ট বিল্ডিংয়ে মামলার এক নম্বর আসামি মো. ইয়াছিন দারোয়ান হিসাবে নিয়োজিত ছিল। ইয়াছিন প্রবাসী মো. নুরুল আলমের দূর সম্পর্কের ভাগিনা। সে সুবাদে আব্দুস শুক্কুর ইয়াছিনকে বিদেশেও নিয়ে যায়। সেখানে আব্দুস শুক্কুরের সঙ্গে আসামি ইয়াসিনের মনোমালিন্য হলে ইয়াছিন দেশে চলে আসে এবং মো. নুরুল আলম ও তার বড় ভাই আব্দুস শুক্কুরের উপর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ কারণেই তারা ওই প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ডা. সামিনার মৃত্যু
মনে ক্ষোভ থাকার কারণে প্রধান আসামি মো. ইয়াছিন বাকি তিন আসামিকে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তারা সকলেই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এদের মধ্যে মো. ইসহাক সুকৌশলে বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘ ছয় বছর আত্মগোপনে ছিল। সোমবার ভোরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে ওই প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বায়েজিদ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য গত বছরের ৩ মার্চ চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞা প্রবাসীর স্ত্রী পারভিন হত্যা মামলায় চার জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। এছাড়া প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।