বিভিন্ন সময় ভারতে আটক হওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন পাঁচ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন।
শুক্রবার (১ এপ্রিল) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন।
ফেরত আসা পাঁচ বাংলাদেশি হলেন- চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার মনিন্দ্র লাল দেবের ছেলে সন্তেুাষ দেব, নারায়ণগঞ্জের খালেক সর্দারের ছেলে বিজয় চুমু, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের মৃত কামাল বেপারীর মেয়ে ময়না বেগম, পটুয়াখারী রাঙ্গাবালী এলাকার আফাজ উদ্দিন মৃধার মেয়ে রোজিনা বেগম ও কুমিল্লা চান্দিনার খালেক মিয়ার মেয়ে কুলসুম বেগম।
আরও পড়ুন: ভারতে ২১ মাস জেল খেটে দেশে ফিরলেন বাংলাদেশি যুবক
সন্তোষ দেবের ছেলে অন্তু দেব বলেন, তার বাবা সন্তোষ দেব প্রায় সাত বছর আগে হঠাৎ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। প্রথমে তারা ভেবেছিলেন তিনি হয়তো তাদের কোনো আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেছেন। পরে আত্মীয় স্বজনসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ খবর করা হয়। এতে কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারেন তার বাবা ভারতে আছে। এতদিন পর বাবাকে ফিরে পেয়ে খুব আনন্দিত বলে জানান তিনি।
কুমিল্লা চান্দিনার কুলসুম বেগমের ভাই আবুল বাশার বলেন, তার বোন কুলসুম বেগম ২০১৪ সালে হঠাৎ করে স্বামীর বাড়ি কুমিল্লার দুর্গাপুর থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। অনেক পরে পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারেন কুলসুম বেগম ভারতের আগরতলায় আছে। কিন্তু কীভাবে গেল তারা বুঝতে পারেননি।
পটুয়াখারী রাঙ্গাবালী এলাকার রোজিনা বেগমের ভাই সাহাব উদ্দিন বলেন, আজ থেকে প্রায় ১২ বছর আগে তার বোন নিখোঁজ হয়েছিলো।
ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মদ সাংবাদিকদের বলেন, পাঁচ বাংলাদেশিই মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ত্রিপুরায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হতে আটক হন। পরে আদালতের নির্দেশে আগরতলার মর্ডান সাইক্রিয়াটিক হাসপাতালে তারা চিকিৎসাধীন ছিলেন। তবে তারা কীভাবে ভারতে এসেছেন সে ব্যাপারে কিছুই বলতে পারেনি। তাদের অনেকেই এই হাসপাতালে চার থেকে পাঁচ বছর বা আরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ার পর তাদেরকে দেশে ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: দেশে ফিরলেন ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিক
ওই হাসপাতালে আরও বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি চিকিৎসাধীন আছেন। পর্যায়ক্রমে তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
দুপুরে আখাউড়া স্থলবন্দরের নো-ম্যান্স ল্যান্ডে তাদেরকে ফেরত পাঠানোর সময় ভারতের ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারি কমিশনার কার্যালয়ের হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মদ, সচিব মো. রেজাউল হক, প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান এস এম আসাদুজ্জামান, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. সাইফুল ইসলাম, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মসূচি প্রধান শরিফুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক সৈয়দ খায়রুল আলম, ইমিগ্রেশন পুলিশ ইনচার্জ সাব ইন্সপেক্টর আবু বক্করসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।