মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে নওগাঁয় বাস-অটোরিকশা শ্রমিক-মালিকদের দ্বন্দ্বের জেরে ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে বাস ও অটোরিকশা মালিক-শ্রমিকরা। এতে নওগাঁ ঢাকা-রাজশাহীসহ আন্তঃজেলা ও জেলার অভ্যন্তরীণ সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: মালিক সমিতির দ্বন্দ্ব: ১৩ দিন সিলেট-ময়মনসিংহ রুটে বাস চলাচল বন্ধ
নওগাঁ জেলা বাসমালিক সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, সরকারি আইন অনুযায়ী মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধ। প্রশাসন, বাসমালিক ও মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও অটোরিকশা চালকেরা নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে জোর করে গাড়ি চালিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, এ নিয়ে ২২ সেপ্টেম্বর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সংঘর্ষের পর প্রশাসনের মধ্যস্ততায় দুই পক্ষের মধ্যে সিদ্ধান্ত হয় সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল করবে না। কিন্তু সিএনজি চালকেরা এই সিদ্ধান্ত অমান্য করে চলছে।
তিনি আরও বলেন, সোমবার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সিএনজি চালানোয় বাসশ্রমিকেরা বাধা দিলে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে মান্দার ফেরিঘাট এলাকায় সিএনজি শ্রমিকেরা বাস শ্রমিকদের মারধর করেন।
তিনি বলেন, ওই ঘটনার জেরে গতকাল সন্ধ্যায় নওগাঁ শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্টান্ডে আরেক দফা উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য শান্ত নামে এক শ্রমিক আহত হয়েছেন। এই ঘটনার বিচার দাবিতে বাসের চালক ও সহকারীরা আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
এ ব্যাপারে নওগাঁ সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আশিক হোসেন বলেন, বাচ্চু সরদার নামে আমাদের একজন সিএনজি চালককে সোমবার বিকেল ৩টার দিকে মান্দার ফেরিঘাটে বাস মালিক সমিতির লাঠিয়াল বাহিনীর লোকজন মারধর করেছে। বাস শ্রমিকেরা তিনটি সিএনজিও ভাঙচুর করেছে। এ রকম ঘটনা প্রতিনিয়িতই ঘটছে।
তিনি আরও বলেন, বাসের লোকজন প্রতিদিনই আমাদের রাস্তায় সিএনজি চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করছে, যা অন্যায়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা আশানুরূপ সহযোগিতা পাচ্ছি না। যার কারণে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। এর সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা সিএনজি চালবো না এবং বাসও চলাচল করতে দিবো না।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান বলেন, নওগাঁয় বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। দ্বন্দ্বের জেরে প্রায় প্রায় ধর্মঘটের ডাক দেন বাস-মালিক-শ্রমিকেরা। গতকাল বাস ও সিএনজি শ্রমিকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনার জেরে আজ সকাল থেকে উভয়পক্ষ যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যান চলাচল স্বাভাবিক করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন বিবদমান উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: পরিবহন শ্রমিকদের বিরোধের জেরে নাটোর-রাজশাহী রুটে উভয় জেলার বাস চলাচল বন্ধ
বিএনপির মহাসমাবেশ সামনে রেখে খুলনায় ২ দিন বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা