মুসারাত জাহান মুনিয়ার মৃত্যুর জন্য তার শোকসন্তপ্ত পরিবার দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
কুমিল্লা জেলার মনোহরপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত শফিকুর রহমানের মেয়ে মুসারাত জাহানের ঝুলন্ত লাশ রাজধানীর গুলশান এলাকার একটি ফ্ল্যাটে সোমবার রাতে উদ্ধার করে পুলিশ।
লাশ উদ্ধারের পর ভুক্তভোগীর বোন নুসরাত জাহান ওইদিন রাত দেড়টার দিকে ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
ইউএনবির সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘২৫ এপ্রিল মুনিয়া আমাকে ফোন করে। সে ফোনে কান্নাকাটি করছিল। বলছিল আনভীর আমাকে বিয়ে করবে না, শুধু ভোগ করেছে। আমাকে বলেছে আমি তার শত্রুর সঙ্গে দেখা করেছি। সে আমাকে ছাড়বে না।’
নুসরাত মুনিয়ার উক্তিতে বলেন, 'আমি ভয় পেয়েছি ... যেকোনো কিছু ঘটতে পারে।'
তিনি আরও বলেন, মুনিয়া তাকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঢাকায় যেতে বলেছে।
আরও পড়ুন: গুলশানে তরুণী নিহত: বসুন্ধরার এমডির বিরুদ্ধে মামলা
এদিকে, মুনিয়ার ভাই আশিকুর রহমান সবুজ ইউএনবিকে বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি না মুনিয়া নিজেকে শেষ করে ফেলতে পারে। ও একজন শিল্পী ছিল এবং মডেল হিসাবেও কাজ করতো।'
কুমিল্লা নারী উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি রাশেদা আক্তার বলেন, 'মৃত্যু আমাদের হৃদয় ভেঙে দিয়েছে ... তনুকে হত্যার সময়ও আমরা একইরকম অনুভব করেছি।'
সেদিন কী ঘটেছিল?
মুনিয়া রবিবার তার বড় বোনকে ফোন করে বলেছিলেন ঝামেলায় পড়েছেন। এ কথা শুনে তার বোন সোমবার কুমিল্লা থেকে ঢাকায় এসে সন্ধ্যার দিকে ওই ফ্ল্যাটে যান। দরজায় ধাক্কাধাক্কি করলেও বোন দরজা খুলছিলেন না।
পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে শোবার ঘরে তার বোনের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। এ অবস্থা তিনি বাড়িওয়ালাকে খবর দিলে পুলিশকে ফোন করেন।
পরে, পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
একমাত্র অভিযুক্তের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
মঙ্গলবার ঢাকার একটি আদালত সায়েম সোবহান আনভীরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি’র দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার জন্য একটি আবেদন জমা দেয়ার পর মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মো. শহিদুল ইসলাম এই আদেশ দেন।