চট্টগ্রাম মহনগরীর নাসিরাবাদ শিল্প এলাকার ইন্ডিপেন্ডেন্ট গার্মেন্টসের ছাদে এমনই এক ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন প্রতিষ্ঠানটির মালিক ও বিজিএমইএ নেতা এসএম আবু তৈয়ব। নিজের একমাত্র মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে গায়ে হলুদ করেন তার কারখানার দেড় হাজার নারী ও পুরুষ শ্রমিককে নিয়ে। আর পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনাও করেন পোশাক শ্রমিকরা।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে সব নারী শ্রমিককে হলুদ শাড়ি এবং পুরুষ শ্রমিকদের জন্য একই রঙের পাঞ্জাবির ব্যবস্থা করা হয়। আবু তৈয়ব ও তার পরিবারের বাকি সদস্যরাও একই পোশাকে হাজির ছিলেন। সেই সাথে সবার জন্যই ছিল চট্টগ্রাম ক্লাবে বিয়ের অনুষ্ঠানে রান্না করা বাবুর্চির খাবার।
গায়ে হলুদ ঘিরে নাসিরাবাদ শিল্প এলাকায় ইন্ডিপেন্ডেন্ট গার্মেন্টসের সব শাখায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। ছাদের ওপর মঞ্চ করে আয়োজন করা হয় অনুষ্ঠান। পুরো ছাদ জুড়ে ছিলেন শত শত নারী। সবই পোশাক শ্রমিক। আবু তৈয়বের স্ত্রী উলফাতুন্নেছা পুতুলের পাশাপাশি সবার পরনে ছিল একই শাড়ি।
এ দম্পতির একমাত্র মেয়ে সাইকা তাফাননুম প্রীতির গায়ে হলুদ উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে যেন চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল উচ্ছ্বাস। নারী শ্রমিকরা সবাই হলুদ বাটো, মেন্দি বাটো এবং লীলাবালি লীলাবালি গানের তালে পুরো অনুষ্ঠান মাতিয়ে তুলেন। সেই সাথে তাদের উপহারে সিক্ত হন প্রীতি। শ্রমিকরা নিজেদের সাধ্য মতো চাঁদা দিয়ে প্রীতিকে চমৎকার এক সেট স্বর্ণের গয়না উপহার দিয়েছেন। প্রায় দেড় লাখ টাকা দিয়ে কেনা এ গয়না তারা নিজেরাই মালিক কন্যার গায়ে পরিয়ে দেন।
এ আয়োজনে ব্যাপারে আবু তৈয়ব বলেন, ‘এটা প্রচারের জন্য নয়। পোশাক কারখানার এ খেটে খাওয়া শ্রমিকদের প্রচুর ভূমিকা রয়েছে আমার জন্য, আমার মেয়ের জন্য, পুরো পরিবারের জন্য। এরাই তো রক্ত ঘাম করে আমাকে এ অবস্থানে এনেছেন। আমার সন্তানকে একটি মর্যাদার আসন দিয়েছেন। আমি মনে করি এরা আমার পরিবারের অংশ। তাই মেয়ের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানটি আমি তাদের সাথে করেছি।’
প্রীতির বিয়ে হচ্ছে ঢাকার বারিধারার আসলাম মোল্লা ও রুবিনা মোল্লার ছেলে শফিউল ইসলাম মোল্লার সাথে। আগামী ৫ জানুয়ারি নগরীর নেভি কনভেনশন সেন্টারে বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।