প্রায় ৬ মাস বন্ধ থাকার পর আবারও শুরু হয়েছে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ৩০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ নিয়ে একটি ভারতীয় ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
এদিকে ৪ মে ভারত সরকার বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: উদ্বৃত্ত সত্ত্বেও সংরক্ষণাগারের অভাবে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়: কৃষিমন্ত্রী
বন্দরের আমদানিকারক আহমেদ আলী বলেন, ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলেও রপ্তানি মূল্য ৫৫০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে। আবার রপ্তানিতে আরোপিত ৪০ শতাংশ শুল্কও প্রত্যাহার করেনি।
তিনি আরও বলেন, রপ্তানি মূল্য বৃদ্ধি এবং রপ্তানি শুল্ক আরোপ- এই দুই কারণে লোকসান হবে এমন ভয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়নি। কিন্তু পেঁয়াজ কিনে রাখা ছিল। তাই বাধ্য হয়ে আমদানি করা হয়েছে। কয়েকদিনে দেশে পেঁয়াজের দাম একটু বেড়ে যাওয়ায় আমদানি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, পেঁয়াজ আমদানি কেজি প্রতি খরচ হচ্ছে ৭০ টাকা। এরমধ্যে সব খরচ রয়েছে। লোকসান না হলে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রাখা হবে।
হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী মো. ইউসুফ আলী বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে আমাদের পক্ষে কোনো বিধি-নিষেধ ছিল না। ভারত সরকার তাদের অভ্যন্তরীণ ঘাটতি মোকাবিলায় রপ্তানি বন্ধ রেখেছিল। গত ৪ মে তারা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় দেশের প্রায় ২০ জন আমদানিকারক খামারবাড়ীতে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন।
তিনি আরও বলেন, আবেদনের ফলে আমদানিকারকদের খামারবাড়ী থেকে অনুমতিপত্র (আইপি) দেওয়া হয়েছে। এসব আমদানিকারকেরা প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পেয়েছেন। কিন্তু শুনেছি আমদানিকারকেরা লোকসান হবে বলে এতদিন আমদানি করেননি।
হিলি স্থলবন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা হিলি পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন মল্লিক বলেন, মঙ্গলবার সন্ধার একটু আগে একজন আমদানিকারক হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ৩০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানি করেছেন। পেঁয়াজ পচনশীল পন্য তাই আমরা দ্রুত খালাস করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। যেন তারা তাদের গন্তব্যে নিতে পারেন।
আমদানিকারক ব্যবসায়ী সূত্র জানান, গত বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত প্রতি মেট্রিকটন পেঁয়াজ ২০০-৩০০ ডলারে আমদানি করা হচ্ছিল। কিন্তু ওই বছরের ২৮ অক্টোবর রপ্তানি মূল্য বৃদ্ধি করে ৮০০ ডলার নির্ধারণ করে। তাতেও আমদানি হচ্ছিল। একপর্যায়ে বন্যার কারণে উৎপাদন ব্যাহতের কথা বলে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে। রপ্তানি স্থগিত করে ভারত সরকার।
গত বছরের ৭ ডিসেম্বর ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখার মহাপরিচালক সন্তোষ কুমার স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটি। এরপর থেকেই হিলিসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। গত ২৩ মার্চ সেই মেয়াদের সময়সীমা বাড়িয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত সরকার।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া আমদানি পণ্য এড়িয়ে চলার আহ্বান বিএনপির
উপজেলা নির্বাচন: হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ