একটি ঋণ খেলাপি মামলায় আশরাফ আলীর স্থলে পুলিশ মিন্টুকে আটক করে জেলহাজতে পাঠায়।
আটক মিন্টু মোল্যা বেনাপোলের দিঘিরপাড় এলাকার মৃত মোহর আলী মোল্যার ছেলে। আর সাজাপ্রাপ্ত আশরাফ আলী বেনাপোলের দিঘিরপাড় এলাকার মৃত মোহর আলীর ছেলে। পিতার নামে মিল থাকায় আশরাফ আলীর স্থলে মিন্টুকে গত বছরের ১৬ নভেম্বর আটক করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
আরও পড়ুন: রমজানের আগেই খুলনায় নিত্যপণ্যের বাজার চড়া
মিন্টুর অভিযোগের ভিত্তিতে চার মাস পর বিষয়টি আদালতের নজরে আসায় অবশেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি মুক্তি পান।
মিন্টু মোল্যা জানান, গত বছরের ১৬ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে তার বাড়িতে হাজির হন বেনাপোল পোর্ট থানার এসআই মাসুম ও একই এলাকার চৌকিদার কালা কবির। তারা দিঘিরপাড় এলাকার মৃত মোহর আলীর ছেলে আশরাফ আলীর নামে আদালতের দেয়া এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত একটি গ্রেপ্তারি পরোনায় দেখান। পিতার নামে মিল থাকায় ওই কপি নিয়ে তাকে আটকের চেষ্টা করেন। এ সময় মিন্টু নিজের পরিচয় দিয়ে তিনি আশরাফ আলী নন বলে দাবি করেন। কিন্তু কোন কথাই শুনতে রাজি হননি সেই দারোগা ও চৌকিদার। রাতেই তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: খুলনায় স্ত্রীকে মারপিটের অভিযোগে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
পরদিন সকালে পরিবারের লোকজন জন্মনিবন্ধন সনদের কপি নিয়ে থানায় গেলেও তাকে পুলিশের হাত থেকে ছাড়াতে পারেননি। ফলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। পরে কারাগারের মধ্যে দরবার ফাইলে অভিযোগ করেন মিন্টু। কোন কাজেই আসেনি তার নালিশ।
মিন্টু আরও বলেন, গত শনিবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনে আসেন আইন মন্ত্রাণলয়ের দু জন উপসচিব। এ সময় মিন্টু তাদের কাছেও নালিশ করেন যে, তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত আশরাফ আলী নন। বিষয়টি আমলে নিয়ে তারা ব্লাস্টের প্যারালিগ্যান অফিসার অ্যাডভোকেট জান্নাতুল ফেরদৌস সূচনাকে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বলেন। এরপর লিগ্যাল এইডের সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার কাগজপত্র যাচাই বাছাইয়ে তারা জানতে পারেন আশরাফ আলী অন্য এক ব্যক্তি। ফলে এদিনই যশোরের যুগ্ন দায়রা জজ ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৬ এর বিচারক মিন্টুকে খালাস দেন।
আরও পড়ুন: বিয়ের পাত্র দেখানোর কথা বলে খুলনায় স্কুলছাত্রীকে ‘ধর্ষণ’
মিন্টুর স্ত্রী ফাহিমা বেগম বলেছেন, তার স্বামীর বিরুদ্ধে কোন মামলা নাই। দুটি ছেলে নিয়ে কোন মতে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালান তার স্বামী মিন্টু। ঘটনার দিন গত বছরের ১৬ নভেম্বর রাতে এলাকার চৌকিদার কালা কবির ও থানার এসআই মাসুম বিনা দোষে তার স্বামীকে আটকের পর জেলখানায় পাঠান। প্রায় চার মাস তার স্বামী জেলখানায় থাকায় অর্ধাহারে তাদের দিন পার হয়েছে।
ব্লাস্ট যশোরের কো-অর্ডিনেটর অ্যাডভোকেট মোস্তফা হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘আটক মিন্টু সাজাপ্রাপ্ত আশরাফ আলী নন, সেটি নিশ্চিত হওয়ার পর আদালত তাকে মুক্তি দিয়েছে।’