প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সিরাজগঞ্জের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। বর্তমানে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনার তীরবর্তী জেলার পাঁচটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল বন্যাকবলিত হয়েছে এবং নতুন নতুন অঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। এতে চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ায় দুঃখ দুর্দশা বাড়ছে।
এদিকে বাড়িঘরে পানি উঠায় চরাঞ্চলের পানিবন্দি মানুষেরা কলা গাছের ভেলা নৌকা ও ঘরের ভিতর মাচল করে বসবাস করছে। বিশুদ্ধ পানির ও জ্বালানির অভাবে তারা খাবার রান্না করতে না পেরে নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করছে। সেইসাথে শিশু খাদ্যের সংকটে তাদের জীবন-যাপন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। গো-খাদ্যের অভাবে গবাদি পশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় বন্যার্ত মানুষেরা। সাপ-পোকামাকড়ের ভয়ে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে বানবাসি মানুষের জীবন।
সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, জেলার সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলায় ১’শ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ করে টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৭৬ মেট্রিক টন চাল ও আড়াই লাখ টাকা মজুদ রাখা হয়েছে। বরাদ্দকৃত চাল ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হচ্ছে এবং কোন এলাকায় ত্রাণের প্রয়োজন রয়েছে কি না তার খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা বিতরণ শুরু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনায় সিরাজগঞ্জের এমপি স্বপনের মৃত্যু
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী (হেড কোয়ার্টার) জাকির হোসেন জানান, উজানের ঢল ও দফায় দফায় বর্ষণে যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যেই যমুনার তীরবর্তী শাহজাদপুর, বেলকুচি, চৌহালী, কাজিপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চল বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে এবং প্লাবিত হচ্ছে আরও নতুন নতুন অঞ্চল। এসব অঞ্চলের অনেক কাঁচা ও পাকা সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে আঁখ, আউশ রোপা, তিল ও সবজি বাগানসহ বিভিন্ন ফসল।