গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এক মাসের মাথায় আবারও পানিতে ভাসছে সিলেট। জেলার নদীগুলোর পানি হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদীর তীর উপচে নতুন করে হাজার হাজার বাড়িঘরে পানি ঢুকছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত পাঁচ লাখের বেশি মানুষ। দুর্গত এলাকায় প্রয়োজনীয় খাদ্য ও উদ্ধার তৎপরতা না থাকায় মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে বন্যার পানিতে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে সুনামগঞ্জ ও ছাতকের সঙ্গে সিলেটের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ঝালোপাড়া এলাকার বাসিন্দা তবারক হোসেন বলেন, প্রতিদিনই পানি বাড়ছে, এভাবে বাড়তে থাকলে সিলেটের কোনো জায়গাই শুকনা থাকবে না।
তিনি বলেন, ‘এত দ্রুত পানি বাড়তে আগে কখনো দেখিনি। এক দিনেই পুরো এলাকা তলিয়ে গেল।’
শুধু ঝালোপাড়াই নয়, পুরো সিলেটেই দ্রুত বাড়ছে পানি। জেলার বেশির ভাগ এলাকাই ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারে শুক্রবার থেকে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী।
গত বুধবার থেকে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অথচ বৃহস্পতিবারই তা ভয়াবহ রূপ নেয়। এদিন বিকাল থেকে দ্রুত বাড়তে শুরু করে পানি। সিলেট নগরের বেশির ভাগ এলাকাই পানিতে তলিয়ে গেছে।
গত মে মাসের মাঝামাঝিতে আরেক দফা বন্যা হয় সিলেটে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসেবে, মে মাসের বন্যায় গত ১৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পানি হয় সিলেটে। তবে চলমান বন্যা গত মাসের রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেছে বলে দাবি প্লাবিত এলাকার মানুষদের।
নগরের শাহজালাল উপশহর এলাকার কয়সর আহমদ বলেন, ‘গত মাসের বন্যায় এতো পানি হয়নি। মে মাসের বন্যায় উপ-শহরের মোড়ে পানি উঠেনি। এবার উপশহরের মোড়ও তলিয়ে গেছে। আর এবার পানি বাড়ছে দ্রুত। একদিনেই পুরো এলাকা তলিয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাসার ভেতরে এখন কোমর সমান পানি। বাসার চৌকিও পানিতে তলিয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন: বন্যায় সারাদেশের সঙ্গে সুনামগঞ্জের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন