বুধবার বিজিবি এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এ নিয়ে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে সপ্তম বারের মতো অস্ত্র উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হলো।
আরও পড়ুন:সাতছড়ি উদ্যান থেকে রকেট লঞ্চারসহ বিস্ফোরক উদ্ধার
মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় চুনারঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গভীর অরণ্যে বিজিবির একটি বিশেষ টিম প্রবেশ করে। সীমান্ত থেকে এক কিলোমিটার বাংলাদেশ অভ্যন্তরে মাটির নিচে পলিথিন মোড়ানো অবস্থায় ১৮টি লঞ্চার উদ্ধার করা হয়।
বুধবার সাতছড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে ৫৫ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল এস এন এম সামীউন্নবী চৌধুরী জানান, গভীর অরণ্যে সন্ত্রাসীরা অস্ত্র গোরাবারুদ মজুদ করছে এমন গোপন তথ্য পেয়ে বিজিবি গত কয়েকদিন ধরে চিমটিবিল ও সাতছড়ি এলাকাটি নজরদারিতে রাখে। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বিকালে অভিযান চালানো হয়।
আরও পড়ুন:শিগগির শুরু হচ্ছে হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দরের নির্মাণ কাজ
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা দেশি না বিদেশি তা গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য পাওয়ার পর নিশ্চিত করা যাবে।’
সামীউন্নবী বলেন, গোপন তথ্য পেয়ে সীমান্ত এলাকা কড়া নজরদারিতে আনা হয়। সন্ত্রাসীরা সাধারণত প্রকাশ্যে রাস্তায় চলাফেরা করে না। একেক সময় একেক পথ ব্যবহার করে। পরবর্তীতে ধারণা করা হয় একটি নির্ধারিত স্থানে সন্ত্রাসীরা আসা যাওয়া করে। এরপর স্থানটি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে এই অভিযান চালানো হয়। এই অভিযানে কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। অনেক চেষ্টা করেও গোলাবারুদ কোন দেশের তৈরি এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, নতুন গোলার কার্যকারিতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তবে পুরনো গোলা আরও বেশী ক্ষতিসাধন করে। সম্প্রতি শ্রীমঙ্গল ও হবিগঞ্জে আটক হওয়া তিনজনের সাথে এই গোলাবারুদ উদ্ধারের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তুহিন মাসুদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:হবিগঞ্জে বিএনপির ইউনিয়ন কাউন্সিলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, পুলিশসহ আহত ১০
এর আগে র্যাব ২০১৪ সালের ১ জুন থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন দফায় অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ৩৩৪টি কামান বিধ্বংসী রকেট, ২৯৬টি রকেট চার্জার, একটি রকেট লঞ্চার, ১৬টি মেশিনগান, একটি বেটাগান, ছয়টি এসএলআর, একটি অটো রাইফেল, পাঁচটি মেশিনগানের অতিরিক্ত খালি ব্যারেল, প্রায় ১৬ হাজার রাউন্ড বুলেটসহ বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধার করে।
এরপর একই বছরের ১৬ অক্টোবর চতুর্থ দফায় গহিন অরণ্যে মাটি খুঁড়ে তিনটি মেশিনগান, চারটি ব্যারেল, আটটি ম্যাগজিন, ২৫০ গুলির ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন আটটি বেল্ট ও উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি রেডিও উদ্ধার করা হয়। পরে ১৭ অক্টোবর দুপুরে এসএমজি ও এলএমজির ৮ হাজার ৩৬০ রাউন্ড, ত্রি নট ত্রি রাইফেলের ১৫২ রাউন্ড, পিস্তলের ৫১৭ রাউন্ড, মেশিনগানের ৪২৫ রাউন্ডসহ মোট ৯ হাজার ৪৫৪ রাউন্ড বুলেট উদ্ধার করা হয়।
৫ম দফায় ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সাতছড়িতে অভিযান পরিচালনা করে ১০টি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ৪০ এমএম অ্যান্টি-ট্যাংক রকেট উদ্ধার হয়।
ষষ্ঠ দফায় ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান থেকে ১৩টি রকেট লঞ্চারের শেলসহ বেশকিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৪ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের হওয়া তিনটি মামলা চুনারুঘাট পুলিশ তদন্ত করে চূড়ান্ত রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেছে। পরবর্তী সময়ে দায়ের হওয়া মামলাগুলো তদন্ত সম্পর্কিত কোনো তথ্য চুনারুঘাট থানায় পাওয়া যায়নি।