যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল।
রবিবার (২৯ অক্টোবর) ভোর ৬টা থেকে টানেলটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। তবে যান চলাচলের প্রথম দিনেই বিরোধী দলগুলোর ডাকা হরতালের কারণে কম গাড়ি চলাচল করছে।
জানা গেছে, টানেল অতিক্রম করার জন্য ভোর থেকে অপেক্ষা করতে থাকে বেশ কিছু যান। ৬টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে পতেঙ্গা প্রান্তে টোল দেন দুলাল সিকদার।
২৫০ টাকা টোল দিয়ে প্রথম টানেলে মাইক্রোবাস নিয়ে প্রবেশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: সড়ক যোগাযোগে নতুন যুগের সূচনায় বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রথম যাত্রীবাহী বাস হিসেবে টোল দেয় বিডি বাস লাভার গ্রুপের একটি বাস। আনোয়ারা প্রান্তে ভোর ৬টায় প্রথম যাত্রী হিসেবে টোল দেন মুন্সিগঞ্জের ব্যবসায়ী জুয়েল রানা। এরপর টোল দেন সাতকানিয়ার চালক শফিক আলম।
টানেলে প্রবেশের জন্য উভয় প্রান্তে অপেক্ষায় ছিল প্রায় শতাধিক গাড়ি। তবে পতেঙ্গা প্রান্তের চেয়ে আনোয়ারা প্রান্তে গাড়ির চাপ বেশি বলে জানা গেছে।
টোল আদায়ে আনোয়ারা প্রান্তে ১৪টি বক্স বসানো হয়েছে। টানেলে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলতে পারবে। সেতু বিভাগের মতে, চালুর পর প্রথম বছরে প্রতিদিন এই টানেল পার হতে পারবে ১৭ হাজার ৩৭৪টি গাড়ি। যার মধ্যে ৩ হাজার ২১৮টি ভারী যান। ২০২৫ সালে প্রতিদিন পার হওয়া যানবাহনের সংখ্যা দাঁড়াবে ২৮ হাজার ৩০৫টিতে।
বঙ্গবন্ধু টানেলে চলতে পারবে ১২ ক্যাটাগরির যানবাহন। এজন্য সর্বনিম্ন টোল ২০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে চলাচল করতে পারবে না মোটরসাইকেল বা তিন চাকার যান।
উল্লেখ্য, শনিবার (২৮ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর বহরে ছিল ২১টি গাড়ি। এর মধ্যে নিজের গাড়ির জন্য ২০০ টাকা এবং বহরের ২০টি গাড়ির জন্য ৪ হাজার টাকা টোল দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু টানেল চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্ত করেছে। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সাগর উপকূল ঘিরে শিল্পের নতুন সম্ভাবনা আশা জাগাচ্ছে।
বেলায়েত হোসেন নামে এক টোল ম্যানেজার জানান, সকাল থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় টানেল। প্রথম এক ঘণ্টায় একটু বেশি যানবাহন ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যান চলাচল বাড়তে পারে। তবে হরতাল না থাকলে আরও বেশি যানবাহন হতো হলে তিনি জানান।
টানেল পারাপারের জন্য টোল নির্ধারণ করে দেয় সরকার। সেতু বিভাগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, জিপ বা পিকআপের জন্য ২০০ টাকা এবং মাইক্রোবাসের জন্য টোল ২৫০ টাকা। বাসের ৩১ আসন বা এর কম হলে টোল ৩০০ টাকা, ৩২ আসন বা তার বেশি হলে ৪০০ টাকা এবং ৩-এক্সেল বাসের জন্য টোল ৫০০ টাকা। ট্রাক-৫ টন পর্যন্ত ৪০০ টাকা, ৮ টন পর্যন্ত ৫০০ টাকা এবং ৮ থেকে ১১ টনের ট্রাকের টোল ৬০০ টাকা। মালবাহী ৩ এক্সেল ট্রেলারের টোল ৮০০ টাকা, ৪ এক্সেল ট্রেলারে ১ হাজার টাকা এবং ৪ এক্সেলের বেশি প্রতি এক্সেলের জন্য ১ হাজারের সঙ্গে ২০০ টাকা যোগ করে টোল দিতে হবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
টানেল প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভোর ৬টায় যান চলাচলের জন্য টানেল খুলে দিয়েছি। এখন থেকে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা টানেল চালু থাকবে। গভীর রাতে যান চলাচল কমে গেলে টোলের লেন কমিয়ে আনা হবে।
আরও পড়ুন: কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল: যা জানা দরকার