জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মঙ্গলবার ঢাকায় ৮৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি খাল সংস্কারসহ ছয়টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে।
এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অধীনে কালুনগর, জিরানী, মান্দা ও শ্যামনগর-এর প্রায় ২০ কিলোমিটার চারটি খাল পুনরুদ্ধার করা হবে জলাবদ্ধতা নিরসনে এবং সৌন্দর্য বর্ধনের মাধ্যমে পরিবেশের উন্নয়নে।
এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। একনেক চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
সভা শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘কমিটি পাঁচটি নতুন প্রকল্প এবং একটি সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন করেছে। সংশোধিত প্রকল্পসহ ছয়টি প্রকল্পের মোট আনুমানিক ব্যয় প্রায় সাত হাজার ১৮ দশমিক ৭৩ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, এর মধ্যে সরকারের তহবিল থেকে চার হাজার ৩৬২ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা, সংশ্লিষ্ট সংস্থার তহবিল থেকে ২৬৯ দশমিক ৬২ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ হিসাবে দুই হাজার ৩৮৬ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা বহিরাগত উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়ক চার লেনসহ একনেকে ৬ প্রকল্প অনুমোদন
একনেক ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী অনুমোদন করেছে, যার ব্যয় ১০ হাজার ৪৬০ দশমিক ৯১ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার ৫০০ দশমিক ২১ কোটি টাকা হয়েছে এবং প্রকল্পের সময়সীমা ২০২২ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
প্রকল্পের তথ্যপত্র অনুযায়ী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ৮৯৮ দশমিক ৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি খালের ১৯ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার পুনরুদ্ধার বা সংস্কারের জন্য ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে ‘খাল পুনরুদ্ধার ও সংস্কার এবং নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি’- শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
এর মধ্যে ৬২৯ কোটি ১১ লাখ টাকা সরকারি তহবিল থেকে এবং বাকি ২৬৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা দেবে ডিএসসিসি।
প্রকল্পের আওতায় মান্ডা খালের আট দশমিক ৯ কিলোমিটার (দুই লাখ ১৭ হাজার ৫০০ বর্গমিটার), শ্যামনগর খালের চার দশমিক ৭৮ কিলোমিটার (৫৭ হাজার ৩৬০ বর্গমিটার), জিরানী খালের তিন দশমিক ৯ কিলোমিটার (৭৮ হাজার বর্গমিটার) এবং কালুনগর খালের দুই দশমিক চার কিলোমিটার (২৮ দশমিক ৮০ বর্গমিটার) খাল পুনরুদ্ধার বা সংস্কার করা হবে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- খাল পরিষ্কার করা, পলি অপসারণ, ঢাল সুরক্ষা ও নিষ্কাশন কাঠামো নির্মাণ, ল্যান্ডস্কেপ তৈরি করা এবং সংশ্লিষ্ট এলাকা সবুজায়ন।
এছাড়া প্রকল্পের অধীনে নাগরিক সুবিধার জন্য ৩৮ দশমিক ছয় কিলোমিটার চোখ ধাঁধানো সুরক্ষা দেয়াল, ৩৬টি পথচারী সেতু, গাড়ি চলাচলের জন্য ১৯টি সেতু, ১০টি পাবলিক টয়লেট, ৩২ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার হাঁটার পথ, চারটি প্লাজা ও সাইকেল লেন স্থাপন করা হবে এবং নান্দনিক ও মনোরম পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ৭৭১টি বাতি স্থাপন করা হবে।
অন্য চারটি প্রকল্প হলো- ৫৯ দশমিক ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সীমান্ত হোস্টেল কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ’ (চট্টগ্রামের সল্টগোলায়); ১২২ দশমিক তিন কোটি টাকায় ‘ইন্টারডাকশন অব ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম (আইটিএস)’ (মুন্সিগঞ্জের কেরানীগঞ্জ ও শ্রীনগর উপজেলায়) দ্বারা বাংলাদেশের জাতীয় মহাসড়ক করিডোরগুলিতে নির্ভরযোগ্যতা ও নিরাপত্তার উন্নতি করা; ৩৪৭ দশমিক চার কোটি টাকায় ‘ঘোনাপাড়া থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার পর্যন্ত রাস্তাটি (শেখ লুৎফর রহমান সেতুর অ্যাপ্রোচসহ) যথাযথ মান ও প্রস্থে উন্নীতকরণ’; এবং ৫৫২ দশমিক ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলায় পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে নদীর তীর রক্ষা।
আরও পড়ুন: একনেকে ২ হাজার ২১৭ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন
নারীদের আইটি দক্ষতা বাড়াতে ২৫০ কোটি টাকার একনেক প্রকল্প অনুমোদন