গণঅভ্যুত্থান চলাকালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুটি মামলার প্রতিবেদন এক মাসের মধ্যে দিতে তদন্ত সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি মো. তাজুল ইসলাম জানান, বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
তিনি বলেন, পলাতক আসামিদের বিষয়ে আদালতকে জানাতে তদন্ত সংস্থাকে নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়া এ বিষয়ে শুনানির জন্য ১৭ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে সকালে নয়জন সাবেক মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে ট্রাইবুনালে হাজির করা হয় এবং তাদের এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আরও পড়ুন: হাসিনার স্বৈরতন্ত্রকে সহজতর করেছে বিচার বিভাগ: টিআইবির নির্বাহী পরিচালক
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি তাজুল ইসলাম বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর পর সোমবার তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এসব আসামির সবাই অন্য মামলায় কারাগারে রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
ট্রাইব্যুনালের যাদের হাজির হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন-সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান, শ্রমিক পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী।
এছাড়াও রয়েছেন-সাবেক মন্ত্রী ড. দীপু মনি, শেখ হাসিনার উপদেষ্টা এবং ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমান, সাবেক মন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আলম।
সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাককে হাজির করার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তাকে হাজির করা যায়নি।
এর আগে গত ২৭ অক্টোবর ১৪ আসামিকে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে হাজির করার নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এছাড়া সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল কাফি, আরাফাত হোসেন, আবুল হাসান ও মাজহারুল ইসলামকে ২০ নভেম্বর আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন আদালত।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর হত্যা, নির্যাতন, অপহরণ ও হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ তথ্যপ্রযুক্তিতে জমা পড়ে। জুলাই ও আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ১০০০ এর বেশি মানুষ নিহত এবং বহু মানুষ আহত হন।
আরও পড়ুন: ইন্টারপোলের মাধ্যমে হাসিনাকে গ্রেপ্তারে আইজিপিকে আইসিটির প্রধান কৌঁসুলির চিঠি