চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের পাহাড়ে শারমিন আক্তার নামে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় অভিযুক্ত জসীম উদ্দীন বাপ্পির (৫০) ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক জামিউল হায়দার এ আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. জসীম উদ্দিন বাপ্পী (৩৫) সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা এলাকার মৃত ইদ্রিস মিয়ার ছেলে।
বাকি আসামিরা হলেন- একই এলাকার বাসিন্দা আইয়ূব খান (৩৬) ও শরীফ আহম্মদ (৫০) সরওয়ার আলম সেরু (৫৫) ও আব্দুল মোতালেব লিটন (৪২)।
এদের মধ্য প্রথম দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। বাকি দুই আসামি কারাগারে জেলহাজতে থাকা অবস্থায় মারা যাওয়ায় তাদের মামলার বিচার কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর সরকারি কৌঁসুলি নিখিল কুমার নাথ বলেন, ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা এলাকায় পাহাড়ে কাঠ সংগ্রহ করতে যায় শারমিন আক্তার (৪০)। সেখানে আসামিরা শারমিন আক্তারকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর শারমিন আক্তারকে আসামি বাপ্পি ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। এর একদিন পর শারমিনের ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। ওই দিন (৩০ মার্চ) শারমিনের মেয়ে ইয়াসমিন বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
পরে পুলিশ সন্দেহজনকভাবে আসামি জসীম উদ্দীন বাপ্পিকে গ্রেপ্তার করলে তিনি ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং অন্য আসামিদের নাম জানায়।
তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৪ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মোট ১৯ জন সাক্ষীর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ১৭ জনকে আদালতে উপস্থাপন করে সাক্ষ্যগ্রহণ করে। সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আসামি জসীম উদ্দীন বাপ্পির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির আদেশ দেন।
রায় ঘোষণাকালে আদালতে উপস্থিত থাকা শারমিনের মেয়ে ও মামলার বাদী ইয়াসমিন বলেন, আমরা অত্যন্ত গরীব। আমার মা পাহাড়ে বাগানে কাজ করত। লাকড়ি খুঁজে এনে বিক্রি করত। আসামিরা আমার মাকে অসহায় পেয়ে এমন নির্যাতন করে খুন করেছে, যারা খালাস পেয়েছে শরীফ ও আইয়ূব, এরাই মূল খুনি। এদের খালাস দেয়া আমি মানি না, আমি উচ্চ আদালতে যাব।
আরও পড়ুন: ভাড়া না বাড়ালে সরকারি নির্দেশনা মানবে না চট্টগ্রামের বাস মালিকরা