চুয়াডাঙ্গার ভিক্টোরিয়া জুবিলি (ভিজে) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষককে মারধর করার ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার দিকে চুয়াডাঙ্গা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুসরাত জেরিন এ আদেশ দেন।
এর আগে আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করে অভিযুক্ত ছাত্র।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় বাবার বিরুদ্ধে মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
এদিকে, এ ঘটনায় ওই ছাত্রের শাস্তির দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার বিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে।
জানা গেছে, এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষককে থাপ্পড় মারার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ঘটনার দিন, পরীক্ষার হলে বিশৃঙ্খলা ও অসুদপায় অবলম্বনের অভিযোগে পরীক্ষার্থী দশম শ্রেণির এক ছাত্রের খাতা কেড়ে নেন শিক্ষক হাফিজুর। এতে শিক্ষক ও ছাত্রের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে শিক্ষককে থাপ্পড় মারে অভিযুক্ত ছাত্র।
এ ঘটনায় শিক্ষকদের পক্ষে রবিবার রাতেই চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেখ সফিয়ার রহমান।
অভিযোগটি পুলিশ মামলা হিসেবে রুজু করে আমলে নেয়।
এদিকে, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় ভিক্টোরিয়া জুবিলি (ভিজে) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে।
এসময় কিছুক্ষণের জন্য শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের সামনে চুয়াডাঙ্গা-জীবননগর রোডে অবস্থান নিলে তীব্র যানযটের সৃষ্টি হয়। পুলিশের হস্তক্ষেপে যানযট নিয়ন্ত্রণে আসে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গ্যালারি’ প্রতিষ্ঠা করল পুলিশ
মানববন্ধনে ভিক্টোরিয়া জুবিলি (ভিজে) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।
সঠিক বিচারের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, এ ধরনের সামাজিক অবক্ষয়ের ঘটনা আর যেন চুয়াডাঙ্গায় না ঘটে। এই ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া হবে না। সামাজিকভাবে আমরা এত নিচে নেমে গেছি, এটা থেকে উত্তরণ দরকার।
তারা আরও বলেন, আমরা এই ঘটনার দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি চাই।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেখ সফিয়ার রহমান বলেন, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ওই শিক্ষার্থী পরীক্ষার নিয়মকানুন যথাযথভাবে মানছিল না। যে কারণে ভুক্তভোগী শিক্ষক তার খাতাটি নিয়ে নেন এবং বসতে বলেন। কিন্তু ওই শিক্ষার্থী শিক্ষকের ওপর চড়াও হয় এবং একপর্যায়ে চড়-থাপ্পড় মারে।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক লিখিতভাবে বিচারের আবেদন করেছেন। তার আবেদন ও সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ সহকারে বিদ্যালয়ের সভাপতির পরামর্শে আমরা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাব্বুর রহমান জানান, সরকারি কর্মচারিকে কর্তব্য পালনে বাধাপ্রদান, আক্রমণ, অপরাধমূলক বল প্রয়োগ এবং আঘাতসহ ভয়-ভীতি প্রদানের অপরাধে ৩৩২, ৩৫৩ ও ৫০৬ ধারায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা নারী ও শিশু নির্যতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আইনজীবী আবু তালেব বলেন, আদালতে হাজির হয়ে ওই শিশু জামিনের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত জামিন নামঞ্জুর করে শিশুটি সংশোধনাগারে (যশোর শিশু ইন্নয়ন কেন্দ্র) পাঠিয়েছেন।