সিলেটের জৈন্তাপুরে বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর পুতুল বেগম হত্যা মামলার রায়ে একমাত্র আসামি স্বামী ওমর ফারুক দোলন (২৭) কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিলেটের দায়রা ও জজ অতিরিক্ত ৩য় আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান ভুঞা এই মামলার রায় ঘোষণা করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, উমর ফারুক দোলন বাবা মিঠু চন্দ, সৎ বাবা হেলাল মিয়া, মা খোদেজা বেগম (পূর্ব নাম শিপা চন্দ) জৈন্তাপুর উপজেলার আলুবাগান শ্রীপুর এলাকার বাসিন্দা। ওমর ফারুক দোলন ২০১১ সালে সিলেট নগরীর পাঠানটুলা এলাকার রফিক আহমদের মেয়ে পুতুল বেগমকে বিয়ে করে। পুতুল বেগম নগরীর স্কলার্স হোম স্কুল মেজরটিলা শাখায় চাকরি করতো। ওমর ফারুক দোলনও এই প্রতিষ্ঠানে পিয়নের কাজ করতো। বিয়ের পরে তাদের ঘরে এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের দুই বছর পর থেকে তাদের মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ সৃষ্টি হয়। ফলে পুতুল বেগম মায়ের কাছে সন্তানসহ চলে আসেন। গত ২০১৫ সালের ১৯ অক্টোবর পুতুল বেগমকে ফোন করে উমর ফারুক দোলন জাফলংয়ের ভ্যালি বোর্ডিং এলাকায় নিয়ে গিয়ে হত্যা করে লাশ গুম করে।
আরও পড়ুন: আশুলিয়ায় গার্মেন্টস কর্মী হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
তখন মেয়ের খোঁজ না পেয়ে বাবা রফিক মিয়া কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে ১ নভেম্বর পত্রিকায় প্রকাশিত অজ্ঞাত মহিলার লাশ উদ্ধারের খবর দেখে পুতুল বেগমের বাবা-মা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে চুড়ি ও কাপড়চোপড় দেখে তাদের মেয়ে পুতুল বেগমের লাশ বলে শনাক্ত করেন।
দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে এই আলোচিত মামলায় ২০ ফেব্রুয়ারি রবিবার দুপুরে সিলেট দায়রা ও জজ অতিরিক্ত ৩য় আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান ভুইঞা ৩০২ ধারায় আসামি ওমর ফারুককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
মামলার রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেঞ্চ সহকারী সৈয়দ আনোয়ারুল ইসলাম।
বাদী পক্ষের আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনা করেন মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম সবুজ, বিবাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন এডভোকেট ময়নুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক ভারতীয় নাগরিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড