ঠাকুরগাঁওয়ে মাদক মামলায় পুলিশের বরখাস্তকৃত এক উপপরিদর্শক (এসআই) হেলাল উদ্দীন প্রামানিক (৪২) ও মানিক দাস (৩৫) নামে দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে তাদের ১২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া অন্য এক ধারায় উল্লেখিত ২ আসামিকে ১ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ মামলায় অপর আসামি মাসুদ রানাকে (২৮) অব্যাহতি প্রদান করা হয়।
বুধবার (২১ জুন) দুপুরে ঠাকুরগাঁও আদালতের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মামুনুর রশিদ এ রায় দেন।
হেলাল উদ্দীন প্রামানিক নওগাঁ জেলার দরিয়াপুর গ্রামের মৃত জগি প্রামানিকের ছেলে এবং মানিক দাস ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানার মন্ডলাদাম গ্রামের মৃত বাদল দাসের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৩ জুন ঠাকুরগাঁও ডিবি পুলিশের সাধারণ ডায়েরি নং-১৮৫ এর প্রেক্ষিতে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়।
আরও পড়ুন: সিলেটে ৩ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
এ সময় পীরগঞ্জ থানার সেনুয়া বাজারে অবস্থানকালে গোপন সংবাদের মাধ্যমে ডিবি পুলিশের টিম জানতে পারে যে, পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের পুরাতন ডাক বাংলোর আঙ্গিনায় ৩ জন লোক মাদকদ্রব্য (ইয়াবা ট্যাবলেট ও গাঁজা) বিক্রির উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
ডিবি পুলিশের টিমটি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তৎকালীন পীরগঞ্জ থানার পুলিশের এসআই হেলাল উদ্দীন প্রমানিককে (৪২) নীল রংয়ের পলিথিন ব্যাগ ধরে রাখা অবস্থায় আটক করা হয়।
পরে নীল রংয়ের ব্যাগটি থেকে মোট ৫ হাজার পিস ও অপর আসামি মানিক দাসের দেহ তল্লাশি করে ৩ হাজার পিস ইয়াবা মোট ৮ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও নগদ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
পরে হেলাল উদ্দীন প্রামানিকের দেওয়া তথ্য মতে তার বাড়ির শয়ন ঘরের খাটের নিচ থেকে ২ কেজি গাঁজাও উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিনই ডিবি পুলিশের এসআই (নিরস্ত্র) রুপ কুমার সরকার বাদি হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখ করে পীরগঞ্জ থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন।
দীর্ঘদিন বিচারান্তে অবশেষে মামলার প্রথম আসামি তৎকালীন পীরগঞ্জ থানার এসআই হেলাল উদ্দীন প্রামানিক ও মামলার দ্বিতীয় আসামি মানিক দাসকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১২ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ প্রদান করে আদালত।
মামলার রায় প্রদানের সময় মানিক দাস পলাতক ছিলেন। এ ঘটনায় আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার ৩ নং আসামি মো. মাসুদ রানাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলী ছিলেন ঠাকুরগাঁও পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট শেখর কুমার রায়। অপরদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট রফিজ উদ্দিনসহ কয়েকজন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে শ্বশুরকে হত্যার মামলায় জামাইয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড