দেশব্যাপী ডিজিটাল কোরবানির পশুর হাটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি(আইসিটি) ডিভিশন ও ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর যৌথ ব্যবস্থাপনায় এই অনলাইন হাট পরিচালিত হবে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার দিকে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইন আহমেদ পলক এমপির সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুনঃ ডিজিটাল হাট থেকে কোরবানির পশু কেনার আহ্বান ডিএনসিসি মেয়রের
রেজাউল করিম এমপি বলেন, ‘দেশ এগিয়ে চলছে। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ মাথা উচু করে দাঁড়াবে। এই ডিজিটাল হাটের মাধ্যমে একদিকে বিক্রেতারা ন্যায্যমূল্য পাবেন অন্যদিকে ক্রেতারা পাবেন সঠিক পশু ক্রয়ের নিশ্চয়তা। হাটে না গিয়ে নিজেকে নিরাপদ রেখে ঘরে বসে কোরবানি পশু পাওয়ার এই সুবিধা আমরা পাচ্ছি কারণ বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছে। আজ আমরা যদি ডিজিটালি সক্ষম না হতাম তাহলে এই হাটের মাধ্যমে মানুষকে আজ এতটা সুরক্ষা দেয়ার জন্য এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়তো কঠিন হয়ে যেত।‘
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ গড়ার এই কর্মযজ্ঞে বিভিন্ন বিভাগের সংশ্লিষ্ঠ ব্যক্তিরা নিরলসভাবে কাজ করছে। কৃষক এবং খামারিরা খাদ্য ও পশু উৎপাদন করে দেশকে খাদ্য ও পশু উৎপাদনে স্বাবলম্বী করে তুলেছে। তিনি সংশ্লিষ্ঠ সকলকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুনঃ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসবে পশুরহাট: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, দেশের ১৮৪৩ টি অনলাইন শপের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ের ২৪১টি হাট একটি প্লাটফর্মে যুক্ত হয়েছে। এতে ই-ক্যাব ও একশপ সার্বিক সহযোগিতা করছে। তিনি ডিজিটাল হাটকে নিরাপদ সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ বান্ধব বলে অভিহিত করেন। অনুষ্ঠান উদ্বোধন শেষে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী স্ক্রো সেবার মাধ্যমে একটি গরু ক্রয় করেন এবং এটি মানবসেবায় দান করেন।
মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ বলেন, সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্ঠায় ও সহযোগিতায় দেশ গবাদি পশুর ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। গত বছর আমাদের এক কোটি ১৮ লাখ কোরবানির পশুর চাহিদা ছিল,কিন্তু করোনার কারণে বিক্রি হয়েছে ৯৪ লাখ পশু। চলতি বছর এক কোটি ১৯ লাখ কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। এ বছর ১৮৪৩টি অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে আমরা রেকর্ড সংখ্যক পশু অনলাইনে বিক্রি করতে পারব।
আরও পড়ুনঃ করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকায় তিন পশুর হাট বাতিল
অনুষ্ঠানে এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক ড. আব্দুল মান্নান পিএএ বলেন, সরকারি সেবাগুলো তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষের জীবনকে কল্যাণময় করে তুলেছে। ডিজিটাল হাটের ধারণা এখন উপজেলা পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এবার সকল প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে এই ডিজিটাল হাট প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের জন্য সুফল বয়ে আনবে।
এটুআই এর যুগ্ম প্রকল্প পরিচালক ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরকে স্বাধীন জাতিসত্ত্বা উপহার দিয়েছেন এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রী একটি সমৃদ্ধ দেশ উপহার দিতে কাজ করছেন। কোনোদিন হয়তো কেউ চিন্তা করেনি তথ্য প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ আজ এই অবস্থানে থাকবে। কোভিড ১৯ নিয়ন্ত্রণে আজকের ডিজিটাল হাট যুগপৎ ভূমিকা পালন করবে।
আরও পড়ুনঃ চট্টগ্রামে ১৭ শর্তে বসবে পশুর হাট
ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার বলেন, সম্পদের সুষম বন্টনে আমরা যদি তথ্য প্রযুক্তিকে ব্যবহার করতে পারি তাহলে এর সুফল প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া সম্ভব। ই-ক্যাব পেন্ডামিকের শুরু থেকে ডিজিটাল হাট, লকডাউন ম্যানেজমেন্ট, টিসিবি’র পণ্য বিক্রি সব বিষয়ে সরকার এবং জনগণের পাশে রয়েছে।
এর আগে গত ৩০ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণলায় অনলাইনে পশু বিক্রি সংক্রান্ত একটি গাইড লাইন প্রকাশ করে। এই উদ্বোধনের মাধ্যমে গত ৪ জুলাই চালু হওয়া ঢাকা মহানগরী কেন্দ্রীক ডিজিটাল হাটকে মুলত দেশব্যাপী সম্প্রসারণ করা হলো।