৬ ডিসেম্বরকে একটি ঐতিহাসিক দিন আখ্যা দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বিরোধপূর্ণ বিভিন্ন সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান করে বাংলাদেশ ও ভারত এক অনুকরণীয় সম্পর্কের দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে।
সোমবার সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের (এসসিএফ) আয়োজিত এক আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা সত্যিই একটি ঐতিহাসিক দিন এবং সত্যিকার অর্থেই এক মৈত্রী দিবস। আমরা (বাংলাদেশ-ভারত) দৃষ্টান্তমূলক সম্পর্ক তৈরি করেছি ( অন্যান্য দেশের জন্য)।’
এসসিএফের প্রধান এম নুরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলি যোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার।অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েন্টসিল, সাবেক কূটনৈতিক মহিউদ্দিন আহমেদ এবং এসসিএফের মহাসচিব হারুন হাবিব প্রমুখ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বারবার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের সরকার ও জনগণের আন্তরিক সমর্থন ও সহযোগিতার প্রশংসা করেন।
তিনি এই ঐতিহাসিক দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
আরও পড়ুন: বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে উন্নত বিশ্বের স্বপ্ন দেখার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
মোমেন বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ উৎসর্গকারী ভারতীয় সেনাদেরও স্মরণ করেন।
বাংলাদেশ ও ভারত ডিসেম্বরের ৬ তারিখ মৈত্রী দিবস উদযাপন করছে। ১৯৭১ সালের এই ঐতিহাসিক দিনে ভুটানের পর ভারত দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
২০২১ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্ব দিবস হিসেবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেন।
আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্দুল মোমেন বলেন, এটা ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ নয় যেটা পাকিস্তান ভুল তথ্য প্রচারের চেষ্টা করেছে।
এসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে ধন্যবাদ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,‘এটি ছিল তৎকালীন ভারত সরকারের নেয়া একটি অনন্য সিদ্ধান্ত। তিনি বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।’
ভারতের আগে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া ভুটান সরকারকেও ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: আফ্রিকা থেকে আসা কাউকে বোর্ডিং পাস দেয়া হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত সমস্যাগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
তিনি ভবিষ্যতে যৌথভাবে বিদেশে সকল বাংলাদেশ মিশনে মৈত্রী দিবস উদযাপনের জন্য ভারতের সমর্থন কামনা করেন।
বিশ্বব্যাপী উদযাপন
এই বছরের উদযাপনের অংশ হিসেবে, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জাপান, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বেলজিয়াম, কানাডাসহ ১৮টি নির্বাচিত দেশের রাজধানীতে যৌথভাবে মৈত্রী দিবস (ফ্রেন্ডশিপ ডে) উদযাপিত হচ্ছে।
মিশর,ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাজ্য ছাড়াও বাংলাদেশ ও ভারতে দুই দেশের নিজ নিজ কূটনৈতিক মিশন দিবসটি উদযাপন করেছে।
আরও পড়ুন: ভারত ভ্রমণের লাল তালিকায় বাংলাদেশ নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী