জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) আকস্মিক বন্যাপ্রবণ জনগোষ্ঠী ও নদীর তীরবর্তী মানুষের বন্যা ঝুঁকি হ্রাস করার লক্ষ্যে ৪ হাজার ৩২৩ কোটি টাকার 'রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর অ্যাডাপটেশন অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি রিডাকশন প্রজেক্ট (রিভার)' অনুমোদন করেছে।
রবিবার রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় আরও সাতটি উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ‘আজ আটটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে এবং প্রকল্পগুলোর মোট আনুমানিক ব্যয় ১২ হাজার ১৬৭ দশমিক ১৫ কোটি টাকা (এখানে শুধুমাত্র দুটি সংশোধিত প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় গণনা করা হয়েছে)।’
তিনি বলেন, মোট অর্থের মধ্যে ৩ হাজার ৯৭ দশমিক ৯১ কোটি টাকা জাতীয় কোষাগার থেকে, ৮ হাজার ৯১২ দশমিক ৭৭ কোটি টাকা বিদেশি উৎস থেকে এবং বাকি ১৫৬ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে নেয়া হবে।
অনুমোদিত ৮টি প্রকল্পের মধ্যে ৬টি নতুন প্রকল্প এবং বাকি ২টি সংশোধিত প্রকল্প।
এছাড়া বৈঠকে ব্যয় না বাড়িয়ে আরও চারটি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর অনুমোদন দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: একনেকে ৭ হাজার ১৮ কোটি টাকার ৬ প্রকল্প অনুমোদন
প্ল্যান্টিং কমিশনের মতে, রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর অ্যাডাপ্টেশন অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি রিডাকশন প্রজেক্ট (রিভার) ৪ হাজার ৩২৩ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৮ সালের জুনের মধ্যে ১৪টি জেলার ৭৮টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হবে।
প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৪ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা আসবে বহিরাগত উৎস (আইডিএ) থেকে।
রিভার প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল আকস্মিক বন্যাপ্রবণ জনগোষ্ঠী ও নদীর তীরবর্তী মানুষের বন্যা ঝুঁকি হ্রাস করা এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
মূল প্রকল্পের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- ৫০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, ১০০টি সৌরবিদ্যুৎ গ্রিড স্থাপন, প্রায় ২৫০টি মাঠের উচ্চতা হ্রাস করা ও ২৭৫ কিলোমিটার বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র সংযোগ সড়কের উন্নয়ন, ৫০০ মিটার সেতু নির্মাণ, ১ হাজার ৩৩০ মিটার কালভার্ট নির্মাণ, ১১০ কিলোমিটার কমিউনিটি অবকাঠামো সংযোগ সড়ক উন্নয়ন, ১৫টি ল্যান্ডিং স্টেজ স্থাপন, প্রায় ৬ হাজার ৬০০টি সড়কে সোলার লাইট স্থাপন ও প্রায় ১ হাজার ৪০০টি বজ্রপাত-রোধী মেশিন স্থাপন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়ক চার লেনসহ একনেকে ৬ প্রকল্প অনুমোদন
আরও পাঁচটি নতুন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- অতিরিক্ত ১ হাজার ৪৮ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ট্রান্সমিশন-গ্রিড সম্প্রসারণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, ১২৮ দশমিক ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে জেন্ডার রেসপনসিভ এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড টিভিইটি সিস্টেম (প্রগ্রেস), ১ হাজার ৬৮৬ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে শুল্ক আধুনিকায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, ১২ দশমিক ৪৪ কোটি টাকা কর্তন করে ৩য় সংশোধিত নগর টেকসই প্রকল্প (ইউআরপি): প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেশন অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিট (পিসিএমইউ), ৩ হাজার ৬৪৪ দশমিক ৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন (এসসিআরডি) প্রকল্প, ১হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ময়মনসিংহ জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, ৩৪৭ দশমিক ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনা-ধোনাগোদা সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন ও নদীর তীর রক্ষা।
দুটি সংশোধিত প্রকল্প হল সাউথ-ওয়েস্টার্ন পাওয়ার ট্রান্সমিশন-গ্রিডের সম্প্রসারণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প যার অতিরিক্ত ব্যয় ১ হাজার ৪৮ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা (বর্তমানে মোট ব্যয় ৪ হাজার ৩২২ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা বেড়েছে); এবং আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট (ইউআরপি): প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেশন অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিট (পিসিএমইউ) (তৃতীয় সংশোধিত) যার খরচ কমানো হয়েছে ১২ দশমিক ৪৪ কোটি টাকা (এখন এর খরচ কমে হয়েছে ৩২ দশমিক ৮৬ কোটি টাকা)।
আরও পড়ুন: একনেকে ২ হাজার ২১৭ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন