স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা টিকা নিয়েছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৪০ হাজার ১৫২ জন এবং নারী ৬৪ হাজার ৩৮৮ জন।
এছাড়া গত ২৭ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মোট টিকা গ্রহীতার সংখ্যা মোট ৫ লাখ ৪২ হাজার ৩০৯ জন, যাদের মধ্যে পুরুষ ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৫৭৮ জন এবং নারী ১ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩১ জন।
এর আগে, মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে দেশে ব্যাপকভাবে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
করোনার টিকা প্রদানে কেন্দ্রে গিয়ে নিবন্ধন সুবিধা বাতিল: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালসহ সারা দেশের এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে কোভিড-১৯ টিকা দেয়া হচ্ছে। টিকাদানের প্রথম দিন মোট ৩১ হাজার ১৬০ জনকে টিকা দেয়া হয় বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে রবিবার বিকালে টিকাদান সংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল।
বর্তমানে বাংলাদেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ৭০ লাখ ডোজ রয়েছে এবং করোনার টিকা নিতে চাইলে www.surokkha.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে।
ভারতের উপহার হিসেবে সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকার ২০ লাখ ডোজ গত ২১ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসে পৌঁছে। এরপর ২৫ জানুয়ারি সেরাম থেকে বাংলাদেশের ক্রয় করা কোভিশিল্ডের প্রথম চালানের ৫০ লাখ ডোজ নিরাপদে ঢাকায় আসে।
টিকা নিতে গ্রামের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করুন: প্রধানমন্ত্রী
গত ২৭ জানুয়ারি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পরীক্ষামূলক টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে পাঁচজনকে টিকা দেয়া হয়।
কেন্দ্রে গিয়ে টিকার নিবন্ধন সুবিধা বাতিল
এদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বৃহস্পতিবার বলেছেন, করোনার টিকা প্রদানে কেন্দ্রে গিয়ে নিবন্ধন সুবিধা বাতিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘টিকা কেন্দ্রগুলোতে ভিড় এড়াতে এবং সুষ্ঠুভাবে টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করতে বৃহস্পতিবার থেকে অনস্পট নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তীতে আবারও প্রয়োজন হলে স্ব-শরীরে এসে নিবন্ধন করে টিকা নেয়ার ঘোষণা দেয়া হবে।’
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ ঘোষণা দেন।
প্রাথমিকের শিক্ষকদের টিকাদান এক সপ্তাহে সম্পন্ন হবে, জানালেন প্রতিমন্ত্রী জাকির
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অনলাইন নিবন্ধনের চেয়ে অনস্পট নিবন্ধনের সংখ্যা বেড়ে গেছে। এদিকে যারা অনলাইনে নিবন্ধন করে টিকা নিতে আসছে, তারা নানা রকম ভোগান্তিতে পড়ছে। অনস্পট নিবন্ধনের কারণে তাদেরকে এসে বসে থাকতে হচ্ছে। বয়স্করাও এসে কষ্ট পাচ্ছে। তাই আজ থেকে টিকা কেন্দ্রে গিয়ে নিবন্ধনের সুযোগ থাকবে না।’
সমালোচনাকারীরা আগেই টিকা নিয়ে নিচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, দিনে দিনে টিকা গ্রহীতার সংখ্যা বেড়েছে। টিকা নিয়ে নানা কথাবার্তা হয়েছিল, সবকিছুকে তোয়াক্কা না করে টিকা কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে, যারা সমালোচনা করেছিল, তারাও আগে আগে টিকা নিয়ে নিচ্ছে।
টিকা নিতে নিবন্ধনকারীর সংখ্যা
নিবন্ধন বাড়ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, টিকা পেতে সুরক্ষা ওয়েবসাইটে এ পর্যন্ত নিবন্ধন করেছে ১০ লাখ ২৯ হাজার ৪৫৭ জন। নিবন্ধনকারীদের মধ্যে চার লাখ ৩৮ হাজার ৯৬৯ নারী এবং ৫ লাখ ৯০ হাজার ৪৭৮ জন পুরুষ। এর মধ্যে প্রথম সারির যোদ্ধা ৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৩৪ জন এবং সাধারণ মানুষ ৪ লাখ ৩৩ হাজার ৬২১ জন।
টিকাদান ত্বরান্বিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
প্রথম ডোজ টিকা নেয়ার জন্য ৯ লাখ ১৪ হাজার ৬৭৬ জনকে এসএমএস পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে গত চার দিনে ৩ লাখের অধিক টিকাদান সম্পূর্ণ হয়েছে। এই কাজ যদি অন্য কোনো সংস্থা দিয়ে করানো হত তাহলে শতাধিক কোটি টাকা খরচ হত। এটা আমরা দুই মন্ত্রণালয় মিলে করছি, বলেন তিনি।