পঞ্চগড়ের মোমিনপাড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নুরুজ্জামান ওরফে নুর আলম (৩৩) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া বর্ডার অবজারভেশন পোস্টের (বিওপি) মোমিনপাড়া এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত নুর আলম পঞ্চগড়ের বোদার সাকোয়া ইউনিয়নের বকশিগঞ্জ গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে নুর আলমসহ কয়েকজন গরু নিয়ে ভারত থেকে ফেরার সময় বেরুবাড়ি সীমান্ত ফাঁড়ির বিএসএফ সদস্যদের সঙ্গে তাদের ধাক্কাধাক্কি ও টানাহেঁচড়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে বিএসএফ গুলি চালায়। এতে নূর আলম গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে অন্যরা নুর আলমের লাশ মোমিনপাড়ায় এক চা বাগানের পাশে ফেলে রাখে।
বিজিবি ও পুলিশ আরও জানায়, খবর পেয়ে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নুর আলমের লাশ উদ্ধার করে। সুরতহাল শেষে নুর আলমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
তারা আরও জানায়, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপুরে মোমিনপাড়া সীমান্ত এলাকার শূন্য রেখায় বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে ব্যাটালিয়ন পর্যায়ের পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের বেরুবাড়ি ২১ বিএসএফ ব্যটালিয়নের কমান্ড্যান্ট সি এস তমার এবং নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আসাদুজ্জামান হাকিমের নেতৃত্বে উভয়পক্ষের ১০-১২ জন করে সদস্য পতাকা বৈঠকে অংশ নেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা, বিএসএফের বিরুদ্ধে মামলা
হাড়িভাসা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ইউসুফ আলী জানান, বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে ৪-৫ বার গুলির আওয়াজ শুনতে পাই। তখন বের হওয়ার সাহস পাইনি। পরে সকালে অনেকের কাছে শুনতে পাই নুর আলমসহ কয়েকজন ভারতে গরু আনতে গিয়েছিল। গরু নিয়ে ফেরার পথে বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে গুলি করে।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিয়া জানান, গুলিতেই নুর আলমের মৃত্যু হয়েছে। গুলিটি তার বাম চোখের নিচে লেগে মাথার পেছন দিয়ে বেরিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছে এবং ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আসাদুজ্জামান হাকিম জানান, বৈঠকে বিএসএফের পক্ষ থেকে বলা হয়, একদল চোরাকারবারী বিএসএফের টহল দলের ওপর হামলা চালায়। তখন বিএসএফ আত্মরক্ষার্থে গুলি করে। তবে কেউ মারা গেছে কি না বিএসএফ তা নিশ্চিত করেনি।
তিনি আরও জানান, বিজিবির পক্ষ থেকে বৈঠকে এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।